মঙ্গলবার বিকেলেই নতুন করে লাগানো হল নেমপ্লেট। নিজস্ব চিত্র
মাঝে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধান। জেলা পরিষদে কৃষি- সেচ কর্মাধ্যক্ষের দফতরের সামনে ফের লাগানো হল রমাপ্রসাদ গিরির নেমপ্লেট! কেন নেমপ্লেট খুলে নেওয়া হয়েছিল? কেনই বা ফের লাগানো হল? তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি অজিত মাইতির জবাব, ‘‘আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
জেলা পরিষদ ভবনের দোতলায় কর্মাধ্যক্ষদের দফতর রয়েছে। জেলার কৃষি- সেচ কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ গিরির দফতরও রয়েছে সেখানে। সূত্রের খবর, সোমবার সকালে অফিস খোলার পরে জেলা পরিষদেরই এক কর্মী রমাপ্রসাদের দফতরের সামনে লাগানো নেমপ্লেটটি খুলে নেন। জেলা পরিষদের এক ‘প্রভাবশালী’ সদস্যই না কি ওই কর্মীকে নেমপ্লেটটি খুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে বিকেলে ফের নেমপ্লেটটি একই জায়গায় লাগিয়ে দেওয়া হয়।
রমাপ্রসাদ যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতিও ছিলেন। লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের দিন কয়েক পরে তাঁকে দলের যুব সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ‘অভিমানে’ দল ছাড়েন এই যুব নেতা। মুকুল রায়ের এক অনুগামীর হাত ধরে তিনি পৌঁছে যান দিল্লিতে, বিজেপির সদর দফতরে। বিজেপি শিবিরে নাম লেখান। তবে তাঁকে দলে নেওয়া নিয়ে জেলা বিজেপির প্রবল আপত্তি ছিল। তাই রমাপ্রসাদকে বিজেপিতে কোনও পদও দেওয়া হয়নি। এর মধ্যেই যুব নেতার ‘ঘরওয়াপসি’ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে শাসক দলের অন্দরে।
শুভেন্দু অধিকারী দলের তরফে পশ্চিম মেদিনীপুরের পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে রয়েছেন। গত রবিবার সন্ধ্যায় গড়বেতায় দলের এক সভায় আসেন শুভেন্দু। দলের কর্মীদের ভিড়ে ঠাসা সভায় তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘যাঁরা যাচ্ছেন তাঁরা আবার তৃণমূলে ফিরে আসতে চাইছেন। মকরামপুরের প্রধান আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। রমা গিরি কোলাঘাটে গিয়ে আমার সঙ্গে মিট করে বলেছেন, দিদিকে বলুন, আমি আবার তৃণমূলে ফিরে আসতে চাই।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিতও মানছেন, ‘‘রমা দলে ফিরতে চেয়েছে। দল এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।’’
সূত্রের খবর, তৃণমূলে ফিরতে চেয়ে না কি লিখিত আবেদনও করেছেন এই যুব নেতা। আবেদনে কি জানিয়েছেন? রমাপ্রসাদের জবাব, ‘‘এ নিয়ে এখনই কিছু বলব না।’’ অবশ্য এই যুব নেতাকে নিয়ে দলের অন্দরে একাংশ কর্মী নানা মন্তব্যও করছেন। এক কর্মীর মন্তব্য, ‘‘জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে এ বার ওকে বীরের সংবর্ধনা দেওয়া হোক!’’ রমাপ্রসাদের ‘ঘরওয়াপসি’ নিয়ে যখন জল্পনা চলছে, তখনই দফতরের সামনে থেকে তাঁর নেমপ্লেট খুলে নেওয়া হয়েছিল। পরে ফের লাগানোও হল। শুভেন্দুর ‘হাত ধরে’ রমাপ্রসাদ তৃণমূলে ফিরছেন, এটা নিশ্চিত হতেই কি ফের নেমপ্লেট লাগানো হল! জল্পনা চলছে জেলা পরিষদের অন্দরেই।