প্রতীকী ছবি।
পণের দাবিতে অত্যাচার ছিলই। তার উপর মেয়ে হওয়ায় বেড়ে গিয়েছিল অত্যাচারের মাত্রা। শেষ পর্যন্ত পুড়িয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। মহিষাদলের আনন্দপুরে ফরিদা বিবি (২৩) নামে ওই মহিলার মৃত্যুকালীন জবানবন্দি ও বাপের বাড়ির তরফে এমন অভিযোগ পেয়ে ভবানীপুর থানার পুলিশ মৃতার ননদ ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ ও মৃতার বাপের বাড়ি সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর চারেক আগে হলদিয়ার ক্ষুদিরামনগরের বাসিন্দা ফরিদার সঙ্গে বিয়ে হয় আনন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ হবিবুর রহমানের। তিনি কাজের সূত্রে বাইরে থাকেন। ফরিদার বাপেরবাড়ির লোকের অভিযোগ, বিয়েতে পণ দেওয়ার পরেও আরও পণের দাবিতে ফরিদার উপরে অত্যাচার করত শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। ফরিদার বাবা শেখ ফজলুরের অভিযোগ, ‘‘পণের জন্য শ্বশুরবাড়িতে যে অত্যাচার করা হচ্ছে মেয়ে তা জানাত। আমরা ওকে বোঝাতাম। কিন্তু বছর তিনেক আগে মেয়ে হওয়ার পরে সেই অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু তাই বলে এ ভাবে মেয়েকে মেরে ফেলবে ভাবিনি।’’
ভবানীপুর থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০ মার্চ অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ফরিদা বিবিকে হলদিয়া হাসপাতালে ভর্তি করে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। খবর দেওয়া হয় বাপের বাড়ির লোকজনকে। গত ২৬ মার্চ ফরিদা মারা গেলে তাঁর বাপের বাড়ির তরফে মেয়েকে পুড়িয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ দায়ের করা হয়। এর পরেই পুলিশ শাশুড়ি সাবিমা বিবি ও ননদ সাবেরা বিবিকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ জানিয়েছে, মারা যাওয়ার আগে ফরিদা তদন্তকারী অফিসারকে জানান যে, শুধু পণের জন্য নয়, মেয়ে হওয়ার কারণে তাঁকে পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিল শ্বশুরবা়ড়ির লোকেরা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে শাশুড়ি সাবিমা জানান, ঘটনার দিন ঝগড়াঝাঁটি করে নিজেই গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগায় ফরিদা।
বৃহস্পতিবার ধৃতদের হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। মৃতার জবানবন্দি অনুযায়ী তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।