প্রেমিকা’র সঙ্গে। নিজস্ব চিত্র
খাঁচার ঘুপচি ঘর পছন্দ হয়নি। সুযোগ পেতেই তাই খোলা আকাশে ডানা মেলেছিল। শেষে ‘প্রেমিকা’র ডাকেই খাঁচার ঘরে ফিরল সে!
হলদিয়ার কিসমত শিবরাম নগরের বাসিন্দা রঘুনাথ পাত্রর বিভিন্ন বিদেশি পাখির ব্যবসা রয়েছে। তাঁর কাছেই রয়েছে একটি পুরুষ রেড উইং ম্যাকাও। রামতারক হাটে এক পাখি খামারির কাছে সেটি রেখেছিলেন প্রজননের জন্য। কেরল থেকে আনা হয়েছে কয়েক লক্ষ টাকার ইনকিউবেটর যন্ত্র। কিন্তু গত ২০ জুলাই পুরুষ ম্যাকাওটি খাঁচা থেকে উড়ে যায়। এর পর শুরু হয় খোঁজ। কয়েক লক্ষ টাকা দামের ওই ম্যাকাওয়ের খোঁজে কেবল টিভি, ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। রঘুনাথেরা এলাকায় চিরুণি তল্লাশি চালান। কিন্তু ম্যাকাও বাবাজি ফেরার-ই!
রঘুনাথ জানাচ্ছেন, পাখিটি খামারের ১০ কিলোমিটারের মধ্যেই রয়েছে ধরে ২৫ জনের একটি দল বানিয়ে তাঁরা খোঁজ শুরু করেন। কখনও কোলাঘাট, তো কখনও মেচগ্রামে তাকে দেখা যায় বলে খবর আসতে থাকে। মাঝে মাঝে বিভিন্ন গাছে পাখিটিকে দেখা গেলেও সে ছিল নাগালের বাইরে। অবশেষে পালানোর আট দিন পরে বুধবার খবর আসে যে, ম্যাকাও রয়েছে পাঁশকুড়ায়। এর পরেই বিশেষ অনুমতি নিয়ে লকডাউনের মধ্যেই রঘুনাথেরা পৌঁছন পাঁশকুড়ায়। ততক্ষণে পাঁশকুড়ার বনমালী কলেজ সংলগ্ন একটি গ্রামে বড় কদম গাছে আশ্রয় নিয়েছে ম্যাকাও। প্রথমে কিছুতেই তাকে ধরা যায়নি। শেষে রামতারক থেকে আনা হয় তার মহিলা সঙ্গীকে। ‘প্রেমিকা’কে দেখেই গাছ থেকে নেমে আসে ম্যাকাও। তখন মাছ ধরার জাল ফেলে ধরা হয় তাকে।
ম্যাকাও জাতীয় পাখিগুলি নানা জাতীয় ফল এবং সূর্যমূখীর বীজ খায়। এতদিন বাইরে থাকায় পলাতক ম্যাকাওটিরও খাবারের সমস্যা হয়েছিল বলে জানাচ্ছেন রঘুনাথ। ঘরে ফেরার এটাও একটা অন্যতম কারণ। রঘুনাথ বলেন, ‘‘ম্যাকাও ভাল উড়তে পারে। খাওয়ারও জোগাড় করতে পারে। কিন্তু এটি নানা সময়ে কাকের দ্বারা বিরক্ত হয়েছে। ও কার্যত ক্ষুধার্ত রয়েছে। তাই ঘরে ফিরেছে।’’
ম্যাকাও ঘরে ফিরতে স্বস্তিতে পেয়েছেন রঘুনাথ। তাঁর কথায়, ‘‘আসলে এত উজ্জ্বল রঙের কারণে এরা তো লুকিয়ে থাকতে পারে না। তবে ঘরের ছেলে ঘরে ফেরায় হাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম।’’