দিনেদুপুরে শ্রীনু নায়ডু খুনের স্মৃতি এখনও ভোলেনি রেলশহর। এ বার টাকা নিয়ে বচসায় খরিদার ছত্তীসপাড়ায় এক যুবকের উপর ছুরি নিয়ে চড়াও হল একদল দুষ্কৃতী। বৃহস্পতিবার রাতে ছুরিতে গুরুতর জখম প্রীতেশ সিংহ নামে ওই যুবককে প্রথমে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল ও পরে মেদিনীপুর মেডিক্যালে পাঠানো হয়। শেষে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথে বছর পঁয়ত্রিশের প্রীতেশের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় খড়্গপুরের নিরাপত্তা নিয়ে ফের সিঁদুরে মেঘ দেখছে বাসিন্দারা।
শহরে মাফিয়ারাজ চলবে না বলে গত বুধবারই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। শ্রীনু খুনে গ্রেফতার করা হয়েছে বড় মাথা বাসব রামবাবুকেও। যদিও দুষ্কৃতীরাজ বন্ধ নিয়ে সংশয়ে শহরবাসী। খরিদার ব্যবসায়ী প্রণব দাম বলেন, ‘‘বড় মাথা গ্রেফতারের পরেও যে শহর বদলাবে না তা আঁচ করছিলাম। কারণ এখন প্রতিটি এলাকায় ‘দাদা’রা মাথাচাড়া দিচ্ছে। কমবয়সী ছেলেরাও দুষ্কর্মে জড়াচ্ছে। প্রশাসনের কড়া হওয়া উচিত।’’
ছত্তীসপাড়া এলাকাতেই প্রীতেশের বাড়ি। সেখানে তাঁর মুদির দোকানও রয়েছে। প্রীতেশের দাদা দীপক সিংহ ওরফে কাল্লুর নামে আগে দুষ্কর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। অস্ত্র আইনে দীপক গ্রেফতারও হয়। অভিযোগ, দীপকের থেকেই স্থানীয় কয়েকজন যুবক টাকা পেত। শুক্রবার বকেয়া টাকা নিয়ে প্রীতেশের দাদার সঙ্গে পাওনাদারদের বচসা বাধে। গোলমালে জড়ায় প্রীতেশ। যদিও দীপকের দাবি, ‘‘স্থানীয় দিলীপ সিংহের ইন্ধনে অকারণে ৩ হাজার টাকা চাইছিল রেন্টু শর্মা, পাপ্পি শর্মারা। ভাই দোকানেই ছিল। ওর সঙ্গে রেন্টুদের ঝামেলা হচ্ছে দেখে যাই। ওরা দিলীপের দোকান থেকে ধারলো অস্ত্র এনে ভাইকে মেরে পালিয়ে যায়।” কেন অকারণে টাকা চাইবে ওরা? কাল্লুর জবাব, “দিলীপদের মুদি দোকান না চলায় হিংসা করে আমাদের। তাই আমাদের দোকান বন্ধের চক্রান্ত করছে।’’ দিলীপকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। খড়্গপুরের এসডিপিও সন্তোষ মণ্ডল বলেন, “টাকা-পয়সা নিয়ে নিজেদের আত্মীয়স্বজনের মধ্যেই ঝামেলা থেকে এই ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত চলছে।’’