বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে পাখির মাংস। মংলামাড়োয়। নিজস্ব চিত্র
নেই নজরদারি!
মাংসের চাহিদায় পরিযায়ী পাখি শিকার করে দেদার বিক্রি হচ্ছে খোলাবাজারে। শীতের মরসুম শুরু হওয়ায় ফের চোরাশিকারিরাও সক্রিয় হয়েছে কেলেঘাই নদী এলাকায়। এই পরিস্থিতিতে বন দফতরের ভূমিকায় হতাশ পরিবেশপ্রেমী থেকে এলাকার মানুষ।
কেলেঘাই নদী এলাকা পাখিদের অবাধ বিচরণ ভূমি হিসেবে পরিচিত। শীতের শুরুতে সূদূর রাশিয়ার সাইবেরিয়া থেকে দলে দলে পরিযায়ী পাখিরা নদী পাশ্ববর্তী এলাকায় ভিড় জমাতে থাকে। এবারও তার অন্যথা হয়নি। যদিও এ বার সংখ্যাটা কম। নদী সংস্কারের পরে নদীর জলাভূমি-সহ নদীবাঁধের চরিত্র বদলে কাটা পড়েছে অসংখ্য গাছপালা। বাসস্থানের সঙ্কটে প্রতিকূল পরিবেশে আগের মতো সংখ্যা পরিযায়ীদের উপস্থিতিতে ভাটা সেই কারণেই বলে মনে করছেন পরিবেশপ্রেমীরা।
পরিয়াযী পাখিদ্র আনাগোনা কমলেও এই সুযোগের অপেক্ষায় থাকা চোরাশিকারিদের সক্রিতায় বিরাম নেই। বন্দুক, গুলতি কিংবা ফাঁদ পেতে দেদার শিকার করা হচ্ছে পরিযায়ী পাখি। পরিযায়ী পাখিদের মাংস সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে তার চাহিদাও বেশি। ফলে এক শ্রেণির মানুষ সেই মাংসের ব্যবসায় নেমে পড়েন এই সময়। এক কেজি ওজনের পরিযায়ী পাখির মাংসের দাম বাজারে প্রায় ৪০০-৫০০টাকা। পিস হিসেবে বক, ডাহুক বিক্রি হয় ৬০-৭০টাকায়। টাকার জন্য চোরাশিকারিদের হামলায় বিপন্ন পরিযায়ী পাখিদের অবাধে শিকার চলছে পটাশপুর এলাকায়।
অভিযোগ, প্রশাসনের নজরদারির অভাবে থাকাতেই চোরাশিকারিরা এতটা বেপোরোয়া। খোলাবাজারে মাংসের জন্য বিক্রি করছে বক, জলপিপি, ডাহুক সহ একাধিক প্রজাতির পাখি। অভাব নেই ক্রেতাদেরও। পটাশপুর থানার মংলামাড়ো বাজার, গদাইভেড়ি, তাপিন্দ কিংবা কেলেঘাই নদী সংলগ্ন পশ্চিম মেদিনীপুরের বাজারে দেদার বিক্রি হচ্ছে পরিযায়ী পাখি। চোরাশিকারিদের উপর প্রশাসনের নজরদারির উদাসীনতায় প্রশাসনকে দায়ী করেছন পরিবেশপ্রেমীরা। অবিলম্বে পরিযায়ী পাখিদের বাঁচাতে বন দফতরকে চোরাশিকারিদের উপর কঠোর নজরদারি-সহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানায়িছেন তাঁরা।
পটাশপুর-১ ব্লকের জীববৈচিত্র্য কমিটির সম্পাদক সোমনাথ দাস অধিকারী বলেন, ‘‘কেলেঘাই সংস্কারের ফলে এমনিতেই বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। পরিযায়ী পাখিদের আসা আগের থেকে আশি শতাংশ কমেছে। তার উপর চোরাশিকারিদের দাপটে বিপন্ন এই সব পরিযায়ী পাখিরা। বন দফতরের এই বিষয়ে কঠোর নজরদারি চালানো জরুরি।’’
পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য জেলা বনাধিকারীক স্বাগতা দাস বলেন, ‘‘পাখি শিকার এবং বিক্রি সম্পূর্ণ বেআইনি ও নিষিদ্ধ। কোথাও এই ধরনের কারবার চললে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাজারগুলিতে নজরদারি চালানোর ব্যবস্থা হচ্ছে।’’