আমপানের তাণ্ডবের চিহ্ন। দু’মাস পরেও ক্ষতিপূরণ পায়নি মহিষাদলের গয়েশ্বরী গার্লস হাইস্কুল। নিজস্ব চিত্র
আমপানের পর প্রায় আড়াই মাস কাটতে চললেও ক্ষতিপূরণের দেখা নেwwই। বিধ্বস্ত স্কুলভবন হিমশিম খেতে হচ্ছে বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষকে। স্কুল খুললে ভাঙা স্কুলঘরে পড়াশোনার কাজ চলবে কী ভাবে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষকেরা।
আমপান ঝড় গিয়েছে গত ২০ মে। ঝড়ের তাণ্ডবে জেলার বিভিন্ন ব্লকে যেমন ঘরবাড়ির প্রভূত ক্ষতি হয়েছে। তেমনই ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলের সংখ্যাও কম নয়। জেলায় হলদিয়া মহকুমায় আমপানের প্রভাব পড়েছে সবচেয়ে বেশি। কিন্তু এই মহকুমায় নন্দীগ্রাম-১ এবং সুতাহাটা ছাড়া আর কোনও ব্লকে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলঘর মেরামতির জন্য স্কুলকর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ পাননি বলে অভিযোগ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছিল। সেই মতো ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলগুলির পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু এতদিনেও বেশিরভাগ স্কুলে ক্ষতিপূরণের টাকা আসেনি বলে অভিযোগ। যে কয়েকটি স্কুলে ক্ষতিপূরণ এসেছে তাও প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম। কারণ আবেদন পত্রে সম্ভাব্য ব্যয়বরাদ্দ ও টাকার পরিমাণ জানাতে বলা হয়েছিল স্কুলগুলিকে। প্রশাসনের নির্দেশমত স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে মেরামতি বাবদ খরচের অঙ্কও বলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম টাকা এসেছে বলে স্কুলগুলির অভিযোগ।
জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিয়া মহাকুমার নন্দীগ্রাম-১ এবং সুতাহাটা এই দুটি ব্লক ছাড়াও জেলায় পাঁশকুড়া ব্লক মিলিয়ে তিনটি ব্লক এই ক্ষতিপূরণ পেয়েছে। এখনো পর্যন্ত বহু স্কুলের পাওনা বাকি।
নন্দীগ্রামের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ‘‘যা ক্ষতি হয়েছে আর যে টাকা পেয়েছি তা দিয়ে সম্পূর্ণভাবে স্কুলের পরিকাঠামো দাঁড় করানো সম্ভব নয়।’’ সুতাহাটার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কথায়, ‘‘সম্ভাব্য খরচেক পরিমাণ বলে দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও সেই পরিমাণ অর্থ সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। যে টুকু টাকা দেওয়া হয়েছে তাতে সম্পূর্ণ ভাবে মেরামতির কাজ করা সম্ভব নয়।’’ মহিষাদলের গয়েশ্বরী গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পারমিতা গিরি বাগ বলেন, ‘‘ঝড়ে স্কুলের ভালরকম ক্ষতি হয়েছে। আবেদনও করেছি। অথচ এখনও ক্ষতিপূরণের টাকার দেখা নেই। বাধ্য হয়ে কিছু টাকা ধার করে আংশিক মেরামতির চেষ্টা করছি। যে হেতু স্কুলটি অনেক পুরনো। তাই এত কম টাকায় সম্পূর্ণ মেরামতি সম্ভব নয়। আশা করছি তাড়াতাড়ি ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।’’
হলদিয়া সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শক রুদ্রনারায়ণ দোলই বলেন, ‘‘জেলা থেকে আবেদনপত্রগুলি রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। রাজ্য সরকার খতিয়ে দেখে সেই আবেদন মঞ্জুর করবেন। যে সমস্ত স্কুল টাকা পেয়েছে সম্ভবত তা সংখ্যালঘু তহবিল থেকে দেওয়া হয়েছে।’’
উল্লেখ্য, করোনা আবহে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুলগুলি খুলে দেওয়ার ভাবনাচিন্তা করছে রাজ্য সরকার। যদি ওই দিন থেকে স্কুল খুলে যায় সে ক্ষেত্রে এই ভাঙাচোরা স্কুলে পড়াশোনা কী ভাবে চলবে সেই প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষকেরা।’’