বেলপাহাড়ির নারায়ণপুরে ‘ঘাঘর ঘেরা’র মুখে মানস ভুঁইয়া। নিজস্ব চিত্র Stock Photographer
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবজোয়ারের প্রস্তুতি সভায় আসা ও যাওয়ার পথে ঘাঘর ঘেরায় পড়লেন মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। বৃহস্পতিবার সভায় আসার আগে জামবনি মোড়ে কুড়মিরা মানস ভুঁইয়ার পথ আটকান। ঘাঘর ঘেরার মুখে পড়েন মন্ত্রী। ফেরার পথে নারায়ণগড়ে কুড়মিরা আটকান মন্ত্রীকে। এতদিন বিজেপির দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারীরা ঘাঘর ঘেরায় পড়েছিলেন। এ বার মন্ত্রীকে আটকালেন আন্দোলনকারীরা। নবজোয়ারের প্রস্তুতি সভা চলছে। তবে ঠিক কোন পথে (রুট) জেলায় নবজোয়ার আসবে সে ব্যাপারে এখনও স্পষ্ট ধারনা দিতে পারছেন না জেলা নেতৃত্ব।
এ দিন জামবনি মোড়ের কাছে হলুদ পতাকা, মাথায় হলুদ গামছা বেঁধে, "জয় গরাম" স্লোগান দিতে থাকেন কুড়মি সামাজিক সংগঠনের মানুষজনেরা। কুড়মি সমাজ (পশ্চিমবঙ্গ) –এর রাজ্য সভাপতি নেতা রাজেশ মাহাতো ও ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা কৌশিক মাহাতোর নেতৃত্বে ঘেরাও কর্মসূচি হয়। গাড়ি থেকে নেমে মানস ভুঁইয়া কুড়মিদের দাবি প্রসঙ্গে রাজেশ মাহাতোর সঙ্গে কথা বলেন। কুড়মি নেতারা মানসকে যাবতীয় কাগজপত্র তুলে দেন। মানস হাত জড়ো করে বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীকে ভুল বুঝবেন না। আপনাদের প্রতি মুখ্যমন্ত্রী শ্রদ্ধাশীল। আমি আপনাদের বার্তা পৌঁছে দেব।" মানস তাঁদের বলেন ,"আমি আপনাদের সমাজের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালবাসা জানাই। আমার রাজনৈতিক এবং সামাজিক জীবনে আপনাদের সাথে সম্পর্ক ভাল। মুখ্যমন্ত্রীও খুবই সহানুভূতিশীল। তবে টেকনিক্যাল মেটাতে কোথায় কী হচ্ছে একটু স্টাডি করতে দিন, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরে এবং মুখ্যমন্ত্রীকে জানাব। রাজেশ বলেন, "দীর্ঘদিনের বঞ্চনা মন্ত্রীকে জানিয়েছি। জাস্টিফিকেশন ও কমেন্টস কেন্দ্রে পাঠানোর কথা বলেছি।
এ দিন নবজোয়ারের প্রস্ততি সভায় এসে অভিষেকের নির্দিষ্ট কর্মসূচি জানাতে পারেননি মানস ও জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মু। দুলাল জানান, আগামী ২৩ তারিখ বাঁশপাহাড়ি হয়ে অভিষেক আসবেন। প্রতিটি অঞ্চল থেকে ৫০ শতাংশ লোক আসবে। প্রতিটি ব্লক থেকে ৩০ হাজার লোকজন আনতেই হবে। জেলা থেকে ৩ লক্ষ লোকজন যে কোনও উপায়ে দরকার। তবে দুলাল বলেছেন, ‘‘শিলদা থেকে পড়িহাটি হযে যাবে না বিনপুর হয়ে দহিজুড়ি যাবে তা এখনও পরিষ্কার নয়। আমরা জানতে পারলেই আপানাদের জানিয়ে দেব।’’ মন্ত্রী মানস বলেন, ‘‘এমন স্বাগত অনুষ্ঠান আয়োজন করুন যা ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে। সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিন। প্রতিটি নেতাকে প্রমাণ করতে হবে। অভিষেক নতুন রাজনৈতিক দিগদর্শন।’’
অভিষেকের ঝাড়গ্রাম সফর প্রসঙ্গে মানস জানান, ২৩ তারিখ আসছেন। এদিক-ওদিক একটু হতে পারে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সম্ভবত তারিখ ২৩ মে। জেলার কোন কোন জায়গায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যাবেন ? কোন পথ দিয়ে যাবেন ? কোথায় রাত্রি যাপন করবেন? সেই প্রসঙ্গে মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, "এখনও পর্যন্ত রূপরেখা ঠিক হয়নি। হলে জানানো হবে।’’
এ দিন বেলপাহাড়ি কমিউনিটি হলে তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচি প্রসঙ্গে প্রস্তুতি সভা হয়। সেখানে জেলার সমস্ত নেতৃত্বর পাশাপাশি অঞ্চল বুথের নেতারা ছিলেন। হাতজোড় করে সভায় মানস বলেন, সংগঠন সবরকম সাহায্য করবে। কর্মীরা আসল শক্তি। আপনারা সব রকম কাজ করবেন। পতাকা বাঁধবেন। আমরা সারা বছর পড়েছি। বই দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খাতা কাগজ ও পেন দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পরীক্ষায় বসতে হবে ঝাড়গ্রামকে। পরীক্ষার রেজাল্ট ভাল করতে হবে।