মাস্টার প্ল্যান চালুর দাবিতে সভা। ঘাটালের শীতলপুরে। নিজস্ব চিত্র।
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে কেন্দ্র অর্থ বরাদ্দ করবে কি। করলে তা কত। সে সব কিছুই জানা নেই। শুধু এটুকু জানা, মুখ্যমন্ত্রীর তৎপরতায় এ নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে এক দফা আলোচনা তো হল। এটাই বা কম কীসের। বলছেন, মাস্টার প্ল্যান নিয়ে দিল্লি সফরে যাওয়া তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য মানস ভুঁইয়া। আর বিরোধীদের বক্তব্য, কথা তো আগেও অনেক হয়েছে। কিন্তু কাজ হচ্ছে কোথায়।
এ বার বন্যার পর ঘাটালে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বন্যার জলে দাঁড়িয়ে জানিয়েছিলেন, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে কেন্দ্রের কাছে দাবি জানাতে দিল্লি যাবে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। সোমবার দিল্লি পৌঁছয় সেই দল। তাতে মানস ছাড়াও ছিলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা, কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী হুমায়ুন কবীর, পিংলার বিধায়ক অজিত মাইতি, মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়া ও ঘাটালের সাংসদ দেব। কেন্দ্রীয় জলশক্তিমন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতের সঙ্গে বৈঠক করছে প্রতিনিধি দল। কথা বলেছে নীতি আয়োগের সঙ্গেও। বুধবার রাজ্যে ফেরার আগে দিল্লি থেকে ফোনে মানস বললেন, ‘‘কেন্দ্রের সঙ্গে মাস্টার প্ল্যান নিয়ে বিশদে কথা হয়েছে। প্রকল্প ধরে ধরে আলোচনা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই আমাদের এই দিল্লি সফর। এতদিন পরে মাস্টার নিয়ে তো অন্তত নাড়াচাড়া হল। এটাই বা কম কীসের।’’
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব রাজ্য। তাদের অভিযোগ, কেন্দ্র অর্থ বরাদ্দ করছে না। আর কেন্দ্রের বক্তব্য, রাজ্য জমি দিচ্ছে না বলেই থমকে রয়েছে প্রকল্প। এ নিয়ে চাপানউতোর চলছেই। তবে মানসদের দিল্লি সফর নিয়ে ততোটা আশাবাদী নয় বিরোধীরা। ঘাটালের প্রবীণ কংগ্রেস নেতা জগন্নাথ গোস্বামী ও সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য অশোক সাঁতরা দু’জনই বলেন, ‘‘মাস্টার প্ল্যান নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী, বিধায়করা দিল্লি গিয়েছেন। খুব ভাল খবর। কিন্তু ওই প্রকল্প রূপায়ণের সদিচ্ছা থাকলে দিল্লি দৌড়ঝাঁপের কোনও প্রয়োজন নেই। তৃণমূল বলছে মাস্টারপ্ল্যান জরুরি। বিজেপিরও দাবি, ঘাটালে মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করতে হবে। তা হলে আটকাচ্ছে কোথায়?এ সবই লোক দেখানো।’’
ঘাটালের প্রবীণ বাসিন্দাদের একাংশ কিন্তু মানসদের দিল্লি সফর নিয়ে এতটাও হতাশ হতে নারাজ। ঘাটালে বন্যার পর মাস্টার প্ল্যান নিয়ে আলোচনা নতুন কিছু নয়। তবে দিন গড়ালেই সে আলোচনা থমকে যায়। এ বার কিন্তু তার উল্টো ছবি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে প্রশাসনিক তৎপরতা। তারপর দিল্লি সফর। এর আগে এমন সক্রিয়তা শেষ কবে দেখা গিয়েছে তা স্মরণে নেই প্রবীণদেরও।
দিল্লি সফর নিয়ে প্রতিনিধি দলকে ধন্যবাদ জানিয়েছে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ কমিটি। দিল্লি সফরকে কাজে লাগাতে পথে নেমেছে শাসক দলও। এ দিন ঘাটাল ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস শীতলপুরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা করছে। সেখানে মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণে মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা বিশদে ব্যাখ্যা করেছেন স্থানীয় নেতারা। এই তৎপরতা ঘাটাল ব্লক জুড়ে চলবে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।