স্ত্রীকে ফিরে পেতে পোস্টার হাতে ধর্নায় বসেছেন যুবক। বৌমাকে ফিরে পেতে ছেলের সঙ্গ দিয়েছেন মা-ও। —নিজস্ব চিত্র।
রীতি মেনে অষ্টমঙ্গলায় নববধূকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে বিপদে পড়লেন বর। যুবকের অভিযোগ, তাঁর স্ত্রীকে মারধর করে আটকে রেখেছেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তাঁকেও মারধর করে তাড়িয়ে দিয়েছেন শ্বশুরবাড়ি লোকেরা। এর পর স্ত্রীকে ফেরত পেতে শ্বশুরবাড়ির সামনেই ধর্নায় বসলেন বর। তাঁর হাতে একাধিক পোস্টার। তাতে লেখা, ‘‘মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে বাড়িতে এসে নিমন্ত্রণ করা সত্ত্বেও আমার উপর অত্যাচার করা হল কেন?’’ একটিতে লেখা, ‘‘আমি আমার স্ত্রী কোয়েলের সঙ্গে দেখা করতে চাই। কথা বলতে চাই।’’ শুধু তাই নয়, বিয়ের প্রমাণ হিসেবে ছবি সাঁটিয়ে ধর্নায় বসেছেন তিনি।
সৌরভ জানা নামে ওই যুবকের হুঁশিয়ারি যত ক্ষণ না স্ত্রীকে ফেরত পাচ্ছেন, তত ক্ষণ তিনি ধর্নাতেই বসে থাকবেন। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে তবে ফিরবেন। এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রামচন্দ্রপুরে।
সৌরভের দাবি, কোয়েলের সঙ্গে তাঁর প্রায় ৭ বছরের সম্পর্ক। কিন্তু প্রেমিকার বাড়ির লোকজন তাঁদের বিয়ে দিতে রাজি হননি। তাই কিছু দিন আগে তমলুকে পালিয়ে গিয়ে মন্দিরে বিয়ে করেন তাঁরা। তার আগেই বিয়ের রেজিস্ট্রি করেছেন। ঘাটাল থানার বাসিন্দা ওই যুবকের এ-ও দাবি, ১৫ দিন আগে বিয়ের পর নিজের বাড়িতে ফেরেন। তখন শ্বশুরবাড়ির লোক জন তাঁদের নিমন্ত্রণ জানান। মিষ্টি হাতে নিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন এসে জানিয়েছিলেন বিয়ের পর অষ্টমঙ্গলা আছে। তাই দু’জনকেই যেতে হবে। সৌরভ ভেবেছিলেন বরফ গলেছে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁদের সম্পর্ক মেনে নিয়েছেন। তাই স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেই তাঁকে মারধর করে বাড়ি থেকে বার করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ সৌরভের। পাশাপাশি, তাঁর স্ত্রীকেও মারধর করে বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। অবশেষে মঙ্গলবার শ্বশুরবাড়ির সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বৌ ফেরতের দাবিতে ধর্নায় বসেছেন তিনি।
সৌরভের কথায়, ‘‘আমি শ্বশুরবাড়িতে মিষ্টি নিয়ে এসেছিলাম। প্রথমে ভাল ব্যবহার করেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। খাওয়া-দাওয়ার পর আমায় মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় ওরা। আমার স্ত্রীকেও মারধর করে। মারের চোটে ও অজ্ঞান হয়ে যায়।’’
সৌরভের মায়েরও দাবি, বৌমাকে তিনি ফেরত চান। তাঁর কথায়, ‘‘আমার সমস্ত গয়না দিয়েছি বৌমাকে। সম্মান দিয়ে বাড়িতে বরণ করেছি। কিন্তু মেয়ের মা আমার ছেলেকে মারধর করেছে। বৌমাকে মারধর করে অজ্ঞান করে দিয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘প্রতি লক্ষ্মীপুজোয় মেয়েটি আমাদের বাড়িতে যেত। লুচি-মিষ্টি করে ওর হাতে পাঠাতাম। সেগুলো বাড়ির লোক খেয়েছে। এখন মেয়েকে সংসার করতে দিতে চাইছে না।’’ অন্য দিকে, কোয়েলের বাড়ির লোকজন এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি।