‘দিদিকে বলো’য় বাধায় জামিন অযোগ্য ধারা

ধৃতরা হলেন বিজেপি-র শিলদা মণ্ডল সভাপতি রজত ঘোষ ও হাড়দার ১৩৪ নম্বর বুথ সম্পাদক অমল সিংহ। ধৃত দু’জন ছাড়াও বিজেপি-র স্থানীয় বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধেও জামিন অযোগ্য ধারায় পৃথক দু’টি মামলা রুজু করেছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাড়দা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৯ ০০:১৭
Share:

ফাইল চিত্র।

বিনপুরের বিধায়কের ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া ও এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ওই নেতার স্ত্রী শ্লীলতাহানির অভিযোগে পুলিশ বিজেপি-র দুই নেতাকে গ্রেফতার করেছে।

Advertisement

ধৃতরা হলেন বিজেপি-র শিলদা মণ্ডল সভাপতি রজত ঘোষ ও হাড়দার ১৩৪ নম্বর বুথ সম্পাদক অমল সিংহ। ধৃত দু’জন ছাড়াও বিজেপি-র স্থানীয় বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধেও জামিন অযোগ্য ধারায় পৃথক দু’টি মামলা রুজু করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের মধ্যে হাড়দা গ্রামের বাসিন্দা বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদক রাজেশ মণ্ডলও রয়েছেন। রাজেশ-সহ বাকি অভিযুক্তদের অবশ্য গ্রেফতার করা হয়নি। পুলিশের দাবি, তারা পলাতক। হাড়দা গ্রামের বাসিন্দা বিজেপি-র বর্ষীয়ান কর্মী প্রদীপ মণ্ডলকে শুক্রবার তৃণমূলের লোকজন মারধর করে বলে অভিযোগ। সেই ঘটনায় তৃণমূলের হাড়দা অঞ্চল সভাপতি সিন্টু সাহা সহ চার জনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রদীপ। তবে ওই মামলায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।

ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়েছে। তদন্ত করে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’

Advertisement

শুক্রবার বিনপুর-২ ব্লকের হাড়দা গ্রামে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি করতে গিয়ে বিজেপি কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন বিনপুরের তৃণমূল বিধায়ক খগেন্দ্রনাথ হেমব্রম। বিধায়ক এলাকার বাড়ি-বাড়ি গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাঁকে বিজেপি-র লোকজন বাধা দেন বলে অভিযোগ। এরপরেই দুই দলের সমর্থকদের দফায় দফায় গোলমাল হয়। তৃণমূলের হাড়দা অঞ্চল সভাপতি সিন্টু সাহার বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে বিজেপি-র বিরুদ্ধে। তাঁর স্ত্রীর শ্লীলতাহানি করা হয় বলেও অভিযোগ। অন্যদিকে, বিজেপি-র এক প্রবীণ সমর্থককে মারধর করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে তৃণমূল ও বিজেপি-র কর্মীরা শুক্রবার সন্ধ্যায় হাড়দায় রাস্তা অবরোধ শুরু করে দেন। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরে দু’পক্ষই অবরোধ তুলে নেয়। রাতেই গ্রেফতার করা হয় রজত ও অমলকে। গোলমালের জেরে বিধায়ক আর রাতে হাড়দা গ্রামে থাকেননি।

পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবারের ঘটনায় বিনপুর থানার আইসি বিপ্লব পতির অভিযোগের ভিত্তিতে একটি স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমোটো) মামলা রুজু করা হয়েছে। বেআইনি জমায়েত, পুলিশকে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, পাথর ও বোতল ছুড়ে প্রাণনাশের চেষ্টার অভিযোগে বিজেপি-র জনা ২০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য দায়ের ওই মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। তৃণমূলের হাড়দা অঞ্চল সভাপতি সিন্টু সাহার স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে শ্লীলতাহানি, ভাঙচুর ও বিস্ফোরক আইনের ধারায় ১২ জন বিজেপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা রুজু করা হয়েছে।

ধৃত দুই বিজেপি নেতাকে শনিবার ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হলে তাঁদের ১৪ দিনের জে‌ল হেফাজতের নির্দেশ হয়। তবে দু’টি মামলার কেস ডায়েরি এ দিন আদালতে দাখিল করেনি পুলিশ। আগামী সোমবার আদালতে সেটি দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। অভিযুক্ত দুই বিজেপি নেতার আইনজীবী তপন সিংহের অভিযোগ, ‘‘শাসকদলের স্বার্থরক্ষার জন্য দু’টি মামলা জামিন অযোগ্য ধারায় দায়ের করা হয়েছে। অথচ আক্রান্ত প্রদীপ মণ্ডলের অভিযোগের ভিত্তিতে সাধারণ ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ওই মামলায় কাউকে গ্রেফতারও করা হয়নি। পুরোটাই রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’’

বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথীর অভিযোগ, ‘‘বিজেপি নেতা-কর্মীদের সাজানো মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। এর প্রতিবাদে সোমবার থেকে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু হবে।’’ তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি বিরবাহা সরেনের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘বিধায়কের কর্মসূচিতে বিজেপি-র লোকজন পরিকল্পিতভাবে গোলমাল পাকিয়ে বাধা দিয়েছেন। হাড়দার মানুষ এখন হাড়ে হাড়ে বুঝছেন বিজেপিকে ওই পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় এনে কী ভুল করেছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement