২৩ বছরের সোনমের বাবার অভিযোগ, জামাই তাঁর মেয়ে এবং নাতনিকে খুন করেছেন। সম্পর্কে জটিলতার কারণে এই খুন বলে অভিযোগ।
স্বামীর সঙ্গে বৌদির পরকীয়ার কথা জেনে ফেলায় পরিবারের মধ্যে শুরু হয়েছিল চরম অশান্তি। সেই রাগে স্ত্রী এবং সাত মাসের কন্যাকে প্রাণে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠল স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের ঘটনা। পুলিশ সূত্রে খবর মৃত মহিলার নাম সোনম খাতুন (২৩)। অস্বাভাবিক ভাবে মৃত্যু হয়েছে সালোনি খাতুন নামে এক ৭ মাসের কন্যাসন্তানের।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল থানার লক্ষ্যা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের গাজীপুর গ্রামে সোনম এবং তার মেয়ের দেহ পাওয়া যায় বাড়ির শোয়ার ঘরে। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই স্থানীয়েরা ছুটে যায় ওই বাড়িতে। খবর পেয়ে চলে আসেন মৃতার বাপের বাড়ির লোকজন। এর পরেই দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক ঝামেলা বাঁধে। মেয়েকে খুন করা হয়েছে, এই অভিযোগ করে সোনমের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে গন্ডগোল শুরু হয়। দু’পক্ষের মধ্যে মারামারিও হয়। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে যায় মহিষাদল থানার পুলিশ। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে পুলিশের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন স্থানীয়েরা। পরে পুলিশ মা এবং মেয়ের দেহ উদ্ধার করে বাসুলিয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে দেহ দুটো পাঠানো হয় ময়নাতদন্তে।
মৃতার বাবা তমলুকের বাসিন্দা রোশন আলির অভিযোগ, “বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে মেয়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু কেউ ফোন ধরেনি। তাই উৎকণ্ঠায় ছিলাম আমরা। পরে রাতের দিকে মেয়ের এক প্রতিবেশী ফোন করে জানায় যে ওকে এবং আমার ৭ মাসের নাতনিকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা খবর পেয়ে ছুটে আসি।’’ কাঁদতে কাঁদতে রোশন বলেন, ‘‘এসে দেখলাম দু’জনের নিথর দেহ পড়ে আছে বিছানায়।’’
সোনমের বাবা জানান, মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন ২ বছর আগে। জামাই কাজের সূত্রে বাইরে থাকতেন। তখন বাপের বাড়িতেই থাকতেন সোনম। পরে জামাই বাড়ি ফিরে এলে মেয়েও শ্বশুরবাড়িতে চলে যান। তবে দিন পনেরো আগে জামাইয়ের সঙ্গে তাঁর বৌদির অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে বলে জানতে পারেন তাঁরা। এই নিয়ে পরিবারের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। তার পরই এই খুনের ঘটনা।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে হলদিয়ার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রাহুল পাণ্ডে বলেন, “আমরা এখনও লিখিত কোনও অভিযোগ পাইনি। দেহ দু’টি ইতিমধ্যেই ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মৃতার স্বামী শেখ সলমনকে আটক করা হয়েছে। কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’