ধাদিকার শেষবেলায় মণ্ডপ তৈরির ব্যস্ততা। —নিজস্ব চিত্র।
আজ বাদে কাল পুজোর উদ্বোধন। কিন্তু এখনও মণ্ডপের কাজ বাকি। প্রতিমা আসেনি। মাথায় হাত পুজো উদ্যোক্তাদের!
আগামী শনিবার মহালয়া। তার আগে কাল, বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ভার্চুয়ালি’ জেলার পুজোর উদ্বোধন করার কথা। তবে এ বার জেলার কতগুলি পুজোর উদ্বোধন তিনি করবেন, এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আজ, বুধবারের মধ্যে চূড়ান্ত হওয়ার কথা। পুর-প্রশাসন সূত্রে খবর, মেদিনীপুরের পালবাড়ির গণপতিনগর সর্বজনীন দুর্গাপুজোর ‘ভার্চুয়াল’ উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার রাতে ওই পুজোর উদ্যোক্তাদের পুরসভায় ডেকে কথা বলেছেন পুরপ্রধান সৌমেন খান। মঙ্গলবার পুরপ্রধান গণপতিনগরে যান। জানা যাচ্ছে, পুজোকর্তারা পুরপ্রধানকে জানিয়েছিলেন, মণ্ডপের কাজই তো শেষ হয়নি। উদ্বোধন কী করে হবে! পুরপ্রধান জানিয়ে দেন, ‘‘একটা কিছু ব্যবস্থা করতেই হবে।’’ গণপতিনগর সর্বজনীনের সম্পাদক গণেশ তোষ বলছিলেন, ‘‘আর দিন দুয়েক আগে জানতে পারলেও ভাল হত। এ বার আমাদের রজত জয়ন্তী বর্ষ। নবদুর্গা করছি আমরা। কৃষ্ণনগর থেকে বুধবারের মধ্যে প্রতিমা আনা অসম্ভব। উদ্বোধনের দিন নবদুর্গার ছবি-সহ একটা ফ্লেক্স মণ্ডপের সামনে রেখে দেব।’’ পুরপ্রধান বলছেন, ‘‘মণ্ডপের কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। বাকিটা বুধবারের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।’’
গড়বেতা ও গোয়ালতোড়ের একটি করে পুজোরও ভার্চুয়াল মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। গড়বেতার ধাদিকার যুবগোষ্ঠীর পুজো আর গোয়ালতোড়ের আমলাশুলি সর্বজনীন দুর্গোৎসবের মণ্ডপ তৈরির ব্যস্ততা বেড়ে গিয়েছে। হাত লাগিয়েছেন উদ্যোক্তারাও। ধাদিকায় যুবগোষ্ঠীর পরিচালনায় সর্বজনীন দুর্গোৎসবের মাঠে এ দিন ছিল তুমুল ব্যস্ততা। উদ্যোক্তাদের পক্ষে শ্যামাপ্রসাদ মল্লিক ও সুব্রত গুড়িয়া বলেন, "থিম বৃন্দাবনের প্রেমমন্দির। বাজেট প্রায় ২৫ লক্ষ। বুধবারের মধ্যে মণ্ডপের কাজ সেরে ফেলতে চাইছি। বাড়তি শ্রমিক লাগিয়ে কাজ হচ্ছে।" তোড়জোড় চলে আমলাশুলি সর্বজনীন দুর্গোৎসবের মণ্ডপেও। এখানে থিম রাজস্থানের কৃষি সংরক্ষণ ব্যবস্থা, সঙ্গে থাকবে কৃষ্ণের লীলাক্ষেত্র। বাজেট ২৫-২৬ লক্ষ টাকা। পুজো কমিটির সম্পাদক বরেন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী ভার্চুয়াল মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন। দ্রুত কাজ চলছে।’’
ফি বছরই বিভিন্ন দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করেন মমতা। এ বার স্পেন সফর থেকে ফিরে পায়ের পুরনো চোটের কারণ তাঁর চলাফেরা আপাতত ‘নিয়ন্ত্রিত’। জানা গিয়েছে, সব ঠিক থাকলে কাল, বৃহস্পতিবারই তিনি ‘ভার্চুয়ালি’ জেলার পুজোর উদ্বোধন করতে পারেন। আগে মহালয়ায় উদ্বোধনপর্ব শুরু হত। গতবার মহালয়ার দু’দিন আগে, অর্থাৎ দেবীপক্ষ শুরুর আগেই পুজো উদ্বোধন শুরু করেছিলেন তিনি। শুরু হয়েছে বিতর্ক। বিজেপির রাজ্য নেতা তুষার মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘পিতৃপক্ষে পুজোর উদ্বোধন! বাঙালির সবটাই একা শেষ করে দেওয়ার সঙ্কল্প নিয়েছেন উনি।’’ তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক প্রদ্যোত ঘোষ পাল্টা বলছেন, ‘‘ধর্মীয় আচার নয়, উৎসবকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী।’’
উদ্বোধন তাহলে মহালয়ার আগেই? গণপতিনগর সর্বজনীনের সম্পাদক গণেশ বললেন, ‘‘বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী ভার্চুয়াল উদ্বোধন করবেন। আমাদের পুজোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন কিন্তু মহালয়ার দিনেই।’’