লন্ডভন্ড তৃণমূল অফিস। শুক্রবার নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল-বিজেপি তরজায় গত কয়েক সপ্তাহে একাধিকবার উত্তপ্ত হয়েছে ময়নার বাকচা পঞ্চায়েত এলাকা। এ বার তার পাশের পঞ্চায়েত এলাকা নৈছনপুর-১ এর আসনান বাজারে উত্তেজনা ছড়াল। তৃণমূলের দু’টি দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, গত ২৩ এপ্রিল নৈছনপুর-১ পঞ্চায়েত এলাকার আসনানে প্রচারে গিয়েছিলেন তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী দিব্যেন্দু অধিকারী। তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, বাকচার চান্দিবেনিয়া গ্রামের লাগোয়া আসনানের ওই প্রচার সভার পরেই বিজেপি কর্মীরা তাদের সমর্থকদের হুমকি দিচ্ছিল। এর পরেই বৃহস্পতিবার রাতে আসনান বাজারে তৃণমূলের দু’টি অফিসে হামলার ঘটনা ঘটে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, আসনান বাজারের এক দিকে নৈছনপুর-২ পঞ্চায়েতের নারকেলদা বুথ তৃণমূল অফিস রয়েছে। সেখান থেকে ১৫০ মিটার দূরে রয়েছে নৈছনপুর-১ পঞ্চায়েতের আসনান বুথ অফিস। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা নাগাদ প্রায় ২০ জন বিজেপি কর্মী- সমর্থক বাজারে বোমাবাজি করতে থাকে। দু’টি অফিসের চেয়ার, টেবিল, টিভি, আলমারি ভাঙচুর, দলনেত্রী ও নেতাদের ছবি, ব্যানার, ফেস্টুন ছিঁড়ে দেওয়া হয়। নারকেলদা বুথ অফিস থেকে ৩০ হাজার টাকা এবং একটি টিভি লুট করা হয় বলে অভিযোগ। বোমাবাজির আওয়াজে স্থানীয় তৃণমূলের লোকজন জড়ো হলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
ময়নার ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুব্রত মালাকার বলেন, ‘‘নৈছনপুরে প্রচারের পরেই স্থানীয় কর্মীদের হুমকি দিচ্ছিল বিজেপি কর্মীরা। আসনান বাজারে দলীয় অফিসে ভাঙচুরে বিজেপির সমর্থকেরাই জড়িত। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।’’ তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপির তমলুক জেলা সভাপতি প্রদীপ দাস বলেন, ‘‘বাকচা-সহ ওই এলাকায় আমাদের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধিতে তৃণমূল দিশাহারা। তাই এমন মিথ্যা অভিযোগ করছে।’’
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই বাকচা এলাকায় নলকূপ বসানো ঘিরে তৃণমূল-বিজেপির দ্বন্দ্বে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। পুলিশ ক্যাম্পে বোমা ছোড়া, গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছিল বিজেপির বিরুদ্ধে। ঘটনায় এক বিজেপি নেতা-সহ চার জন বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।
আসনান বাজারের ঘটনা প্রেক্ষিতে বলতে গিয়ে পাল্টা অভিযোগ করেছেন প্রদীপ। তাঁর অভিযোগ, ‘‘তমলুকের শ্রীরামপুর-২ পঞ্চায়েতের কালাচাঁদ বুথে পোস্টার লাগানোর সময় আমাদের কর্মীদের মারধর করেছে তৃণমূলের সমর্থকেরা।’’ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব প্রদীপের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
আসনানের ঘটনায় তমলুকের এসডিপিও সব্যসাচী সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘ভাঙচুরের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করা হচ্ছে।’’