ঘেরা হচ্ছে এলাকা। বুধবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুর শহরে। নিজস্ব চিত্র
করোনা- সংক্রমণ রুখতে ফের কড়া লকডাউনের পথে হাঁটার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। নবান্নের তরফে মঙ্গলবারই রাজ্যের সব জেলাগুলিকে নির্দেশিকা পাঠিয়ে জানানো হয়েছে, আজ, বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা থেকে গণ্ডিবদ্ধ এলাকাগুলিতে (কন্টেনমেন্ট জ়োন) কড়া লকডাউন কার্যকর করতে হবে। প্রশাসন সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে জেলায় ৩৩টি গণ্ডিবদ্ধ এলাকা রয়েছে। সেই এলাকাগুলিতে কড়া লকডাউন কার্যকর করতে প্রশাসনিক প্রস্তুতিও শেষ।
বুধবার জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘রাজ্যের নির্দেশিকা কার্যকর করতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলিতে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হচ্ছে।’’ জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমারও বলেন, ‘‘পুলিশ সক্রিয় রয়েছে। কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলিতে কড়া নিয়ন্ত্রণবিধি কার্যকর করা হচ্ছে।’’ লকডাউন কার্যকর করতে বুধবার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সেরেছে পুলিশ-প্রশাসন। জেলা থেকে ব্লকগুলিতে নির্দেশ পৌঁছেছে। থানাগুলিতেও নির্দেশ পৌঁছেছে। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলায় গণ্ডিবদ্ধ এলাকার সংখ্যা ছিল ১৯৯টি। তবে ওই দিনই ১৬৭টি এলাকার ওই মেয়াদ ফুরিয়েছে। অর্থাৎ, বাকি ১৯টি এলাকা গণ্ডিবদ্ধ হিসেবে রয়েছে। বুধবার গণ্ডিবদ্ধ এলাকার তালিকায় আরও ১৪টি এলাকার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
কনটেনমেন্ট জ়োন: ৩৩
ব্লক
• ঘাটাল ২
• খড়্গপুর- ১ ১
• খড়্গপুর- ২ ৩
• দাসপুর- ১ ৭
• দাসপুর- ২ ৫
• শালবনি ২
• কেশিয়াড়ি ১
• নারায়ণগড় ২
• মেদিনীপুর ১
• গড়বেতা- ১ ১
শহর
• খড়্গপুর ৭
• ঘাটাল ১
(পশ্চিম মেদিনীপুরের কোথায় কত কন্টেনমেন্ট জ়োন। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত। তথ্যসূত্র: জেলা প্রশাসন)
একটা সময়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে সংক্রমণ অতি মাত্রায় বাড়লেও গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অবশ্য তা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, মঙ্গলবার পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪২৫। এরমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৩৫২ জন। সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৬৬। অর্থাৎ, জেলায় সুস্থতার হার প্রায় ৯০ শতাংশ। অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরার শুরুর দিকে জেলায় লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছিল করোনা- সংক্রমণ। ভিন্ রাজ্যগুলি থেকে প্রায় ৭১ হাজার জন পশ্চিম মেদিনীপুরে ফিরেছেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘এক সময়ে সংক্রমণ বেড়েছিল। কিন্তু এখন তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।’’
গণ্ডিবদ্ধ এলাকাগুলিতে লকডাউন কতদিন চলবে, সে ব্যাপারে নবান্ন পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলেই প্রশাসনের এক সূত্রে খবর। আনলকপর্বে এ জেলাতেও প্রায় প্রতিদিনই করোনা আক্রান্তের হদিস মিলছে। আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসক, নার্সের মতো ‘করোনা- যোদ্ধারাও’। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক মানছেন, ‘‘অন্য এলাকাগুলিতে অনেকটা রাশ এসেছে। এই পর্বে ঘাটাল, দাসপুর, খড়্গপুরের মতো এলাকাতেই সংক্রমণের হার বেশি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘লকডাউন কার্যকর করতে ওই এলাকার কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলিতে বিশেষ জোর দেওয়া হবে।’’