শিল্প সমন্বয় বৈঠক। নিজস্ব চিত্র
আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে মঞ্চে উঠে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। হলদিয়ায় সরকারি কর্মসূচিতে এবার হাজির তৃণমূল নেতৃত্ব। শিল্প সংক্রান্ত কর্মসূচিতে মঞ্চে যখন জেলাশাসক এবং একাধিক মন্ত্রী হাজির রয়েছেন, সেখানে চেয়ার বসে থাকতে দেখা গেল তৃণমূলের হলদিয়া শহর সভাপতি-সহ দুই নেতাকে। কোনও প্রশাসনিক পদ বা নির্বাচিত প্রতিনিধি না হওয়া সত্ত্বেও, কীভাবে তাঁরা মঞ্চে ঠাঁই পেলেন সে নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে।
শনিবার হলদিয়ার দুর্গাচকে কুমারচন্দ্র জানা প্রেক্ষাগৃহে ক্ষুদ্র ছোট ও মাঝারি শিল্প দফতরের তরফে একটি শিল্প সমন্বয় বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের ক্ষুদ্র ছোট মাঝারি এবং বস্ত্র দফতরের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, রাষ্ট্রমন্ত্রী তাজমুল হোসেন, মৎস্য মন্ত্রী বিপ্লব রায় চৌধুরী, কারাগার মন্ত্রী অখিল গিরি, ক্ষুদ্র ছোট ও মাঝারি শিল্প দফতরের প্রধান সচিব রাজেশ পান্ডে, পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি, জেলার একাধিক মহকুমাশাসক প্রমুখ। আর তাঁদের পাশাপাশি, মঞ্চ আলো করে বসে রইলেন তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক স্বপন নস্কর এবং তৃণমূলের হলদিয়া শহর সভাপতি মিলন মণ্ডল। ব্যবসা করলে সাধারণ মানুষ যে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা পেতে পারেন, তা নিয়ে এ দিনের সমন্বয় বৈঠক আয়োজন করা হয়েছিল।
সেখানে সরকারি পদাধিকারী মানুষজনের উপস্থিত থাকবার কথা। কিন্তু তার পাশাপাশি কীভাবে শাসকদলের নেতারা সেই মঞ্চে উঠলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন করছে বিরোধীরা। ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের রাজ্যের সহ-সভাপতি প্রদীপ কুমার বিজলী বলেন, ‘‘যেখানে মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠকে এসে দলীয় কর্মীদের বার্তা দিয়ে যান, সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের যে কোন অনুষ্ঠানে তৃণমূল নেতারা মঞ্চ কাঁপাচ্ছেন।’’
সরকারি মঞ্চে তৃণমূল নেতা কেন?
প্রতিক্রিয়া জানতে জেলাশাসক পূর্ণেন্দু কুমার মাজিকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। আর সাফাই দিয়ে তমলুক সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক স্বপন নস্কর বলেন, ‘‘মন্ত্রী অখিল গিরির তরফে কার্ড দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাই গিয়েছিলাম।’’ মন্ত্রী অখিল অবশ্য ফোন ধরেননি।
অন্যদিকে, এদিন হলদিয়া মহকুমা-সহ জেলার একাধিক এলাকা থেকে একাধিক ক্ষুদ্র উদ্যোগপতি বৈঠকে উপস্থিত হয়েছিলেন। উপস্থিত ছিলেন হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে বড় বড় শিল্প কারখানার আধিকারিকরা। প্রেক্ষাগৃহের বাইরে ছিল সরকারের একাধিক দফতরের স্টল। সরকারি আধিকারিকেরা উদ্যোগপতিদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন। উদ্যোগপতিরা একাধিক অসুবিধার কথা জানান সরকারি আধিকারিকদের। প্রধান সচিব ও জেলাশাসক তৎক্ষণাৎ নির্দিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের বিষয়টি নজর দেওয়ার নির্দেশ দেন।