ভোটের আগে বন্ধ মদের দোকান

সরকার অনুমোদিত মদ দোকান খোলার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সম্প্রতি জেলার বিভিন্ন এলাকায় মদের দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

এগরা শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৯ ০৫:১৬
Share:

সরকার অনুমোদিত মদ দোকান খোলার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সম্প্রতি জেলার বিভিন্ন এলাকায় মদের দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। নির্বাচনের আগে এ ধরনের কোনও অপ্রীতিকর অবস্থা এড়াতে অন্য পন্থা নিল পুলিশ প্রশাসন। নির্বাচন না শেষ হওয়া পর্যন্ত এগরায় নতুন তৈরি হওয়ায় সাতটি সরকার অনুমোদিত মদ দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিল তারা।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রের খবর, এগরা শহর এবং দুই ব্লক মিলিয়ে সরকার অনুমোদিত নতুন ৯টি মদের দোকানের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। গত মাসেই মির্জাপুর, পানিপারুল, ভবানীচক, এগরা বস্তিয়া-সহ একাধিক জায়গায় ওই ৯টি মদের দোকান চালু হয়। কিন্তু নতুন করে মদ দোকান খোলায় এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সেখান এলাকাবাসীরা। গত ২১ ফেব্রুয়ারি এগরা-১ ব্লকের মির্জাপুরে একটি মদের দোকানে উত্তেজিত জনতা ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেই রেশ কাটার আগেই ২৫ ফেব্রুয়ারি পানিপারুল পেট্রোল পাম্পের কাছে আর একটি দোকানে গ্রামবাসীরা একই কাণ্ড ঘটান। পরিস্থিতি সামাল দিতে যেতে হয়েছিল পুলিশকে।

রবিবারই লোকসভা নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষিত হয়েছে। ভোটের আগে যাতে মদ দোকান খোলা ঘিরে যাতে কোনও অশান্তি না ছড়ায়, সে জন্য বাকি অনুমোদিত নতুন মদের দোকানগুলি বন্ধ রাখার ব্যাপারে সচেষ্ট হয়েছে পুলিশ। এ নিয়ে আবগরি দফতরে একটি বৈঠক হয়েছে। এছাড়া, এগরা পুলিশও নতুন মদ দোকানগুলি বন্ধ রাখার আর্জি জানিয়ে জেলা আবগরি দফতরে চিঠি পাঠিয়েছে।

Advertisement

আবগরি সূত্রের খবর, নির্বাচন পরিস্থিতিতে আপাতত মির্জাপুরের তিনটি, পানিপারুলের দু’টি, ভবানীচকের একটি এবং এগরার একটি দোকান সাময়িক বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওযা হয়েছে। নির্বাচন পরবর্তী সেই সকল দোকান খোলার বিষয়ে পরবর্তী সিন্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা যুগ্ম আবগরি সুপার মানিক সরকার বলেন, ‘‘আইন শৃঙ্খলা বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচন পরিস্থিতিতে দোকানগুলি বন্ধ রাখা হয়েছে। নির্বাচন পরবর্তী পর্যায়ে পুলিশ প্রশাসন দোকান খোলার বিষয়ে পদক্ষেপ করবে।’’ এ নিয়ে এগরা মহকুমা পুলিশ আধিকারিক শেখ আখতার আলি বলেন, ‘‘এলাকার আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে আবগারি দফতরের অফিসারদের সঙ্গে আলোচনা করে দোকান আপাতত বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়েছি।’’

কিন্তু ওই সাতটি দোকানই বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত কেন? অন্য দোকান থেকে মদ কিনেও তো কোনও ব্যক্তি মত্ত অবস্থায় আইন শৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটাতে পারে! এ ব্যাপারে পুলিশ জানাচ্ছে, এলাকায় নতুন করে মদের দোকান খোলা ঘিরে গ্রামবাসীরা বেশি উত্তেজিত হচ্ছেন। সে কারণেই নতুন দোকানগুলি আপাতত বন্ধের সিদ্ধান্ত।

এ দিকে দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে চিন্তিত ওই সব দোকানের ব্যবসায়ীরাও। শৈবাল ঘোড়াই নামে পানিপারুলের এক মদ ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘আমাদের মৌখিক ভাবে সাময়িক দোকান বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ভাবে দীর্ঘদিন দোকান বন্ধ থাকলে তো আমাদের ব্যবসার ক্ষতি হয়ে যাবে।’’

যদিও আবগারি দফতর সূত্রের খবর, দোকান বন্ধ থাকলে ব্যবসায়ীরা সরকারকে রাজস্ব দেবেন কি না, সেই বিষয়ে এই মুহূর্তে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement