TMC

নন্দকুমার মডেলে আস্থা! তৃণমূলকে সরাতে এ বার মহিষাদলেও ‘সমবায়’ গড়ল বাম-বিজেপি

আগামী ২০ নভেম্বর রাধাকৃষ্ণ সমবায়ে নির্বাচন। এখানে মোট ৭৬টি আসন। সব ক’টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। ‘সংযুক্ত কৃষক মোর্চা’ গড়ে ৬২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি। ১৩টি আসনে বামপ্রার্থী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মহিষাদল শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২২ ১২:০৯
Share:

ফাইল চিত্র।

নন্দকুমার মডেলের ছায়া এ বার পূর্ব মেদিনীপুরেরই মহিষাদলে। সমবায় নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে হাত ধরাধরি করে লড়ছে বাম এবং বিজেপির জোট। সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের বহরমপুর সমবায়ের নির্বাচনে তৃণমূলকে বড়সড় ধাক্কা দিয়েছিল বাম-বিজেপি জোট। দু’পক্ষের তৈরি ‘পশ্চিমবঙ্গ সমবায় বাঁচাও মঞ্চ’ ৬৩টি আসনের সবগুলিতেই হারিয়ে দেয় তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীদের। এ বার সেই জোটের ছায়া মহিষাদলের কেশবপুর জালপাই রাধাকৃষ্ণ সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির পরিচালন সমিতির নির্বাচনেও। ওই সমবায়ের নির্বাচনের ফলাফল কোন দিকে যায় তা নিয়ে তৌরি হয়েছে কৌতূহল।

Advertisement

আগামী ২০ নভেম্বর রাধাকৃষ্ণ সমবায়ের নির্বাচন। তৃণমূল পরিচালিত এই সমবায়ে রয়েছে মোট ৭৬টি আসন। যেখানে সব ক’টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। তবে ‘সংযুক্ত কৃষক মোর্চা’ গড়ে ৬২টি আসনে বিজেপি এবং ১৩টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে বামেরা। ১টি আসনে বিরোধীদের কোনও প্রার্থী না থাকায় সেই আসনটি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূলের ঝুলিতে গিয়েছে। বাকি ৭৫টি আসনে ভোটের ফলে নন্দকুমারের ঝলক দেখা যাবে কি না তা নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা।

জোট নিয়ে রাখঢাক নেই বাম এবং বিজেপি, কোনও শিবিরেরই। ইটামগরা-২ অঞ্চলের বিজেপির আহ্বায়ক রামকৃষ্ণ দাসের দাবি, ‘‘এই সমবায়টাকে আমরা বাঁচানোর স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করছি। তৃণমূলের আমলে গত কয়েক বছরে এখানে নানা দুর্নীতি, স্বজনপোষণ হয়েছে। বেআইনি ভাবে নিয়োগ হয়েছে। সারের দোকান, রেশনের দোকানে লোকসান দেখানো হচ্ছে।’’ রামকৃষ্ণের মতে, “আমাদের লড়াই তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেই হিসাবে মানুষের বিরুদ্ধে মানুষের জোট গড়েছি আমরা।’’

Advertisement

জোটের আর এক শরিক সিপিআই-এর ইটামগরা-২ আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক সুধাংশু বারিকের ব্যাখ্যা, ‘‘তৃণমূল রাজনৈতিক ভাবে এই সমবায়ে ঢুকেছিল। সেখানে নিজেদের স্বার্থে কাজ করেছে। সাধারণ মানুষ বঞ্চিত। ওরা কখনওই মানুষের স্বার্থে কাজ করেনি। তাই এ বার তৃণমূল বিরোধী সমস্ত মানুষ একসঙ্গে জোট বেঁধে লড়াইয়ে নেমেছি। যে কোনও মূল্যে তৃণমূলকে এই সমবায় থেকে উৎখাত করাই আমাদের লক্ষ্য।’’

বাম এবং বিজেপি দুই ভিন্ন মেরুর রাজনৈতিক দল এক ছাতার তলায়! তা দেখে মহিষাদলের তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘‘শুধু মহিষাদলের সমবায় নির্বাচনেই নয়, রাজ্য জুড়েই বাম, বিজেপি এবং কংগ্রেস হাত মিলিয়েছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওদের এই চক্রান্ত ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে। বাংলার মানুষ সেটা বুঝেছে। এই অশুভ আঁতাঁত গড়েই ৯ নভেম্বর নন্দকুমারের বহরমপুর সমবায় সমিতির ভোটে জিতেছে। তবে এমন জোট নিয়ে বেশি দূর এগনো যাবে না। কেশবপুর জালপাইয়ের সমবায় নির্বাচনে ওরা বিপুল ভোটে পরাস্ত হবে। মানুষ ওদের কোনও ভাবেই বিশ্বাস করে না।’’

মতবাদের ফারাক যতই থাক, তা আপাতত সরিয়ে রেখে বাম-বিজেপি শিবির এক হয়ে চলছে মহিষাদলে প্রচার। বাম-বিজেপি নেতারা গা ঘেঁসাঘেঁসি করেই প্রচারে যাচ্ছেন মানুষের বাড়ি বাড়ি। পাল্টা প্রচার চালাচ্ছে জোড়াফুল শিবিরও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement