সেই মুর্হূত। নিজস্ব চিত্র।
রাখির পরে ভাইফোঁটা! সোমবার লালগড় ব্লকের যুব তৃণমূল নেতা জলধর পণ্ডাকে ভাইফোঁটা দিলেন ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর নেত্রী চুনিবালা হাঁসদা।
সোমবার বিনপুরের মাগুরা গ্রামে চুনিবালার বাড়িতে গিয়েছিলেন জলধর। তাঁকে ফোঁটা দেন চুনিবালা। মিষ্টি খাওয়ান। তবে কার্তিক সংক্রান্তি থাকায় এদিন ভুরিভোজের পরিবর্তে নিরামিষ খাবার খাইয়েছেন জলধরকে। জলধরও শাড়ি উপহার দিয়েছেন চুনিদিদিকে। এ বছর রাখি পূর্ণিমার দিনেও শুভেন্দু অনুগামী জলধর বিনপুরের মাগুরা গ্রামে চুনিবালার বাড়িতে গিয়ে তাঁর কাছে রাখি পরেছিলেন। সেদিনই চুনিবালা-জলধরকে নিয়ে নতুন সমীকরণের জল্পনা শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক মহলে।
চুনিবালার স্বামী প্রয়াত নরেন হাঁসদা ছিলেন ঝাড়খণ্ডী আন্দোলনের প্রবাদ পুরুষ। ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর প্রতিষ্ঠাতাও নরেন। যদিও ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে চুনিবালার সঙ্গে শাসকদলের সম্পর্কের অবনতি হয়। অভিযোগ, চুনিবালার দলের নেতা-কর্মীদের ভাঙিয়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ানোর ক্ষেত্রে জলধরের অন্যতম ভূমিকা ছিল। চুনিবালাও জলধরকে জব্দ করতে আসরে নামেন। কয়েক বছর আগে মাগুরায় রাস্তার ধারে থাকা নরেন হাঁসদার মূর্তিতে কালি মাখানোর অভিযোগে জলধরের সঙ্গীসাথীদের বিরুদ্ধে মামলাও করেছিলেন চুনিবালা। অথচ সেই জলধর রাখি পূর্ণিমায় বিনপুরের মাগুরা গ্রামে চুনিবালার বাড়িতে যাওয়ায় তৃণমূল ও ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন) উভয়দলের কর্মীরাই অবাক হয়ে যান।
মাগুরায় নরেন হাঁসদার শুরু করা কালীপুজোর কমিটির সহ সভাপতি পদে রাখা হয় জলধরকে। ওই কমিটির সভানেত্রী চুনিবালার মেয়ে সাঁওতালি সিনেমার অভিনেত্রী বিরবাহা হাঁসদা। গত শনিবার মাগুরায় ওই কালী পুজোর উদ্বোধন করতে এসেছিলেন শুভেন্দু। চুনিবালা ও বিরবাহা হাঁসদার পাশে থাকার বার্তা দিয়ে যান শুভেন্দু। ওই অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন জলধর পণ্ডা। সব মিলিয়ে জঙ্গলমহলের আপাত রঙহীন রাজনীতি এখন জমজমাট।
এই প্রথমবার চুনিদিদির ফোঁটা পেয়ে আপ্লুত জলধর বলছেন, ‘‘সব কিছু রাজনীতি দিয়ে বিচার করা উচিত নয়। এই প্রথমবার চুনিদিদির ফোঁটা পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি। কারণ নরেন হাঁসদার স্মৃতিবিজড়িত চুনিদিদির বাড়ি পবিত্র ভূমি।’’ আর চুনি বলছেন, ‘‘অতীত আঁকড়ে লাভ নেই। বর্তমান নিয়ে এগিয়ে চলার নামই তো জীবন! জলধর ভ্রাতৃস্থানীয়। তাই ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় ফোঁটা দিয়েছি।’’