কুড়মি সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতি তালিকায় পুনরায় অন্তর্ভুক্তি-সহ একাধিক দাবিতে কাল, সোমবার চার রাজ্যে মহামিছিল ও রেল রোকো আন্দোলনের ডাক দিয়েছে আদিবাসী কুড়মি সমাজ।
রীতিমতো প্রচারপত্র ছড়িয়ে সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে ঝাড়খণ্ড, বাংলা, বিহার ও ওড়িশায় এই কর্মসূচি হবে। এ রাজ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর ও পুরুলিয়া জেলায় এই কর্মসূচি হবে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ওই দিন দক্ষিণ পূর্ব রেলের খড়্গপুর-টাটা শাখার সর্ডিহা স্টেশনে রেল অবরোধ করা হবে বলে সংগঠন সূত্রে জানানো হয়েছে। আদিবাসী কুড়মি সমাজের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি রাজেশ মাহাতো বলেন, ‘‘আগামী সোমবার সকাল দশটায় মহামিছিল করে সর্ডিহা স্টেশনে রেল আটকানোর চেষ্টা করা হবে। রেল কর্তৃপক্ষ এবং কেন্দ্রীয় আদিবাসীকল্যাণ মন্ত্রী জুয়েল ওঁরাম-কে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’’
কুড়মিদের এই সংগঠনটির দাবি, পরাধীন ভারতে ব্রিটিশ সরকারের তরফে জারি করা একটি নোটিফিকেশন অনুযায়ী এ দেশের ১৩টি উপজাতির সঙ্গে কুড়মি-রাও আদিবাসী তালিকাভুক্ত ছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে বিভিন্ন অনুন্নত সম্প্রদায়কে তফসিলি জাতি অথবা উপজাতি তালিকা ভুক্ত করা হয়। অথচ স্বাধীন ভারতে কুড়মিদের তফসিলি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করে বাদ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
কুড়মিরা যে আদিবাসী তা নিয়ে বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ দাখিল করে গত সাড়ে তিন দশক ধরে নিরন্তর দাবি জানিয়ে আসছে কুড়মিদের বিভিন্ন সংগঠন। ঝাড়খণ্ড রাজ্য সরকার কুড়মিদের আদিবাসী স্বীকৃতির দাবির বিষয়টিকে মান্যতা দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিবেচনার জন্য পেশ করেছে। ওড়িশা সরকারও সেখানকার কুড়মিদের তফসিলি উপজাতি তালিকাভুক্ত করার জন্য কমিশন গঠন করেছে। অথচ পশ্চিমবঙ্গে ৫০ লক্ষ কুড়মি বসবাস করলেও রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ।
আদিবাসী কুড়মি সমাজের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি রাজেশ মাহাতো বলেন, “রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী সাংসদ থাকাকালীন স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য সোচ্চার হয়েছিলেন। অথচ বর্তমান রাজ্য সরকার কুড়মিদের আদিবাসী স্বীকৃতির দাবির ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপই করছে না।” চারটি রাজ্যে প্রায় সাড়ে তিন কোটি কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন। রাজ্য ও কেন্দ্রের উদাসীনতায় তাঁরা তালিকাভুক্ত না হওয়ায় বিভিন্ন সরকারি সুযোগ সবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।