—ফাইল ছবি।
তেলঙ্গানার উপমুখ্যমন্ত্রী মাল্লু ভাট্টি বিক্রমার্কার বাড়িতে চুরি করে বিহারের পালানোর ছক কষেছিলেন তাঁরই বাড়ির কেয়ারটেকার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই ছক বানচাল করে খড়্গপুর স্টেশনের জিআরপিএফ। ধৃত রোশনকুমার মণ্ডল এবং উদয়কুমার ঠাকুরকে শুক্রবার খড়্গপুর আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। বিচারক দু’জনকেই তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ ভুবনেশ্বর-হাওড়া জনশতাব্দী এক্সপ্রেস খড়্গপুর স্টেশনের ৭ নম্বর প্লাটফর্মে এসে দাঁড়াতেই ট্রেন থেকে নামেন রোশনেরা। তাঁদের সঙ্গে ছিল একটি ট্রলি ব্যাগ। কিন্তু সে সময় স্টেশনে স্পেশ্যাল চেকিং চলছিল। স্টেশন চত্বর জুড়ে পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ ছিল। এক সঙ্গে এত পুলিশ দেখে ঘাবড়ে যান রোশন এবং উদয়। দু’জনেই কোনওক্রমে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয় না। তাঁদের আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় পুলিশ আটক করে। তার পর উদয়দের সঙ্গে থাকা ট্রলিতে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ নগদ প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা, ১০০ গ্রাম ওজনের একটি সোনার বিস্কুট, কিছু বিদেশি মুদ্রা, রুপোর বাসনপত্র এবং প্রচুর পরিমাণে অলঙ্কার উদ্ধার করে। এত বাসনপত্র, বিদেশি মুদ্রা কোথা থেকে এল, তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি উদয়রা।
পুলিশ ওই দুই যুবককে আটক করে। দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই চুরির কিনারা হয়। জানা যায়, রোশন বিহারের মধুবনির বাসিন্দা। তিনি তেলঙ্গানার উপমুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে কেয়ারটেকারের কাজ করতেন। চুরির উদ্দেশে কয়েক দিন আগে বিহার মধুবনি থেকে তাঁর বন্ধু উদয়কে ডেকে পাঠান। দু’জনে মিলে উপমুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে তাঁর বাড়ির সিন্দুকের তালা ভেঙে ওই জিনিসগুলো চুরি করে পালিয়ে যান। তেলঙ্গানা থেকে তাঁরা প্রথমে যান ভুবনেশ্বরে। সেখান থেকে বিহারে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। সেই অনুযায়ী, খড়গপুর স্টেশনে নেমে ফের ট্রেন পরিবর্তন করতেন দু’জনে। কিন্তু তাঁর আগেই রেল পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়।
তেলঙ্গানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন তদন্তকারীরা। রেলপুলিশের এসআরপি (খড়্গপুর) দেবশ্রী স্যানাল জানান, তেলঙ্গানা বানজারা হিলস্ থানায় যোগাযোগ করে জানা যায় সেখানে রোশনের নামে একটি মামলা রুজু হয়েছে। তেলেঙ্গানা পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। শুক্রবার ধৃতদের আদালতে হাজির করানো হয়। শুনানি শেষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর বন্দনা ঘোষ বলেন, ‘‘ধৃত দুজনকে তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।’’