সরকারি ধান ক্রয়ের শিবিরে চাষিদের হাতে চেক তুলে দিচ্ছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। পাঁশকুড়ার প্রতাপগড়ে পার্থপ্রতিম দাসের তোলা ছবি।
রেশন ডিলার থেকে শুরু করে ডিস্ট্রিবিউটাররা যে এখনও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে তা প্রকাশ্যে স্বীকার করে নিলেন রাজ্যের খাদ্য দফতরের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। শনিবার সকালে পাঁশকুড়ার প্রতাপপুরে সরকারি মূল্যে ধান কেনার শিবিরের অনুষ্ঠানে এসে তিনি বলেন, ‘‘আমি প্রতি রবিবার ৭টি করে রেশন দোকান পরিদর্শন করি। এ পর্যন্ত ১০৯১টি রেশন দোকান পরিদর্শন করেছি। প্রতিটি দোকানই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত।’’
শনিবার পাঁশকুড়ার অনুষ্ঠানে জ্যোতিপ্রিয়বাবু জানান, ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে রাজ্যে ২২ লক্ষ মেট্রিকটন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে এখনও পর্যন্ত ২১ লক্ষ মেট্রি কটন চাল কেনা হয়েছে। তবে এখনও কৃষকদের ঘরে ধান থেকে যাওয়ায় আরও ১৮ লক্ষ মেট্রিকটন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এমনকী অগস্ট মাস থেকে খাদ্য সুরক্ষা বিল চালুর পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ প্রকল্পে জঙ্গলমহল, পাহাড় ও আয়লা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষদের জন্য দু টাকা কেজি দরে চাল দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বর্তমানে রাজ্যে ৩ কোটি ২১ লক্ষ মানুষ দু’টাকা কিলোগ্রাম দরে চাল পাচ্ছেন। খাদ্য সুরক্ষা বিল চালু হওয়ার ফলে আগামী অগস্ট মাস থেকে ৬ কোটি ১ লক্ষ মানুষ ২ টাকা কিলোগ্রাম দরে মানুষ চাল পাবেন।’’ বাম আমলের কাজ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘৯২টিও ব্লকে গোডাউন করা হবে। সেগুলিতে দুই থেকে তিন হাজার মেট্রিক টন করে চাল বা গম রাখা হবে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘দেনায় আমাদের মাথা ডুবে গিয়েছে। তার মধ্যেই কাজ করতে হচ্ছে।’’
এ দিনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন সমবায় দফতরের মন্ত্রী জ্যোতির্ময় করও। বামেদের বিঁধে তাঁর বক্তব্য, ‘‘তিনি বলেন, ‘‘৩৪ বছর বাম শাসনে রাজ্যের সমবায়ের পরিকাঠামোর উন্নয়ন হয়নি। সমবায় সমৃদ্ধ হলে চিটফান্ডের রমরমা হত না। আমরা সমবায়কে সমৃদ্ধশালী করায় উদ্যোগী হয়েছি।’’
শনিবার বিকেলে তমলুকে খাদ্য দফতরের অফিসে রেশন ডিলার, ডিস্ট্রিবিউটর, ধানকলের মালিকদের নিয়ে বৈঠক করেন খাদ্যমন্ত্রী। খাদ্যমন্ত্রী দফতরের আধিকারীকদের জানিয়ে দেন অভাবি ধান বিক্রি করা যাবে না। অভাবী ধান বিক্রির জন্য কেউ উৎসাহ দিলে তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করা হবে। এ দিন ভগবানপুরের কলাবেড়িয়াতে সরাসরি কৃষকের হাতে টাকা তুলে দেন খাদ্যমন্ত্রী।র পটাশপুরের টেপরপাড়ায় একটি স্থানীয় ক্লাব ও সরকারের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত একটি মিনি ইনডোর গেমস কমপ্লেক্স- এর উদ্বোধন করেন তিনি। হাজির ছিলেন জেলা বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ মৃণাল দাস প্রমুখ।