ঝাড়গ্রামে বিজেপি-র সভায় ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুণ্ডা। নিজস্ব চিত্র।
ফের রাজ্যের ক্ষমতায় তৃণমূল এলে এরপর রাজ্যবাসীর পরণের কাপড়টুকুও থাকবে না। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঝাড়গ্রামে বিজেপি-র এক নির্বাচনী জনসভায় শাসক দল সম্পর্কে এমনই কটাক্ষ করলেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুণ্ডা।
এ দিন অরণ্যশহরের অফিসার্স ক্লাব মাঠে ঝাড়গ্রাম ও বিনপুর আসনের দুই দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে নির্বাচনী সভা করতে আসেন অর্জুনবাবু। তিনি বলেন, “মানুষের সমর্থনে ভোটে জেতার পর, গত পাঁচ বছরে সেই মানুষেরই সর্বনাশ করেছে তৃণমূলের সরকার। সারদায় সর্বস্বান্ত হয়েছেন সাধারণ মানুষ। জনগণের টাকা লুঠ করেছেন শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা। মেলা-খেলা ও দান-খয়রাতির অপরিমিত ব্যয়ের ফলে হাঁড়ির হাল রাজ্যের। তৃণমূল আবার সরকার গড়ার সুযোগ পেলে এ বার সাধারণ মানুষের পরণের কাপড়ও ওরা খুলে নেবে।”
তৃণমূল নেত্রীকে কটাক্ষ করে অর্জুনবাবু বলেন, “সারদায় দিদির খুবই শ্রদ্ধা। আর ওঁর দলের নেতাদের ভক্তি নারদায়।” বাংলায় ও হিন্দিতে বক্তৃতার সময় বারে বারে নানা উপমা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের কড়া সমালোচনা করে অর্জুনবাবুর বলেন, “মানুষের জনসমর্থন আদায় করে আপনারা নির্বাচনে ক্ষমতা দখল করলেন। চিটফান্ডের মাধ্যমে জনগণের কষ্টার্জিত টাকা লুঠ করলেন। রাজ্যটাকে দেউলিয়া করে দিলেন। এ তো দেখছি সেই বাংলা প্রবাদ: ‘তোরই শিল, তোরই নোড়া, তোরই ভাঙি দাঁতের গোড়া’।”
তিনি অভিযোগ করেন, মানুষের হাতে কাজ নেই। কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির নতুন নাম দিয়ে তৃণমূলের সরকার নিজেদের নামে চালিয়ে দিচ্ছে বটে। কিন্তু আমজনতার কাছে সেই সুযোগ পৌঁছচ্ছে না। রাজ্যের তহবিলে এক বছরে কত টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার বলে দাবি করেন মুণ্ডা। মিনিট পনেরো বক্তৃতা করার সময় শুরু হয় বৃষ্টি। বক্তৃতা শেষ করে দিয়ে অর্জুনবাবু বলেন, “বৃষ্টি হচ্ছে মানে আমাদের রেজাল্ট মিষ্টি হবে।”
এদিন সভায় ছিলেন বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম আসনের প্রার্থী অজয় সেন, বিনপুর আসনের প্রার্থী মুরারিমোহন বাস্কে, বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী, দলের ঝাড়গ্রাম জেলার দুই সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত মাহাতো ও
অবনী ঘোষ।
এ দিন ঝাড়গ্রামের সভায় অভিনেত্রী তথা বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়েরও আসার কথা ছিল। তবে রূপা আসেননি। বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী মঞ্চে ঘোষণা করেন, “নির্বাচনী প্রচারের থেকেও বড় কাজে পোস্তায় সেতু ভেঙে দুর্ঘটনাগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়েছেন আমাদের নেত্রী রূপাদি। তাই তিনি ঝাড়গ্রামে আসতে পারেননি।”