প্রতীকী ছবি।
প্রত্যেক বারই নিজের শাবক খেয়ে ফেলত মা হায়না। আগে একাধিকবার সন্তান প্রসব হলেও তাদের বাঁচানো যায়নি। মাসখানেক আগে ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্কে চারটি শাবক প্রসব করেছিল হায়নাটি। এ বার তিনটি শাবক মারা যায়। একটি শাবককে কোনওক্রমে সরাতে পেরেছিলেন চিড়িয়াখানার কর্মীরা। মাস দু’য়েকের পরিচর্যায় হায়না শাবক ভাদুকে বাঁচাতে পেরে খুশি সকলে।
বছর চারেক আগে খড়্গপুরের হিজলিতে লোকালয়ে ঢুকে পড়া একটি স্ত্রী হায়না ধরে ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানায় নিয়ে আসা হয়। পরে পুরুলিয়া থেকে উদ্ধার হওয়া একটি পুরুষ হায়নাও আসে। দু’টি হায়নাকে একই এনক্লোজারে রাখার ফলে গত চার বছরে অন্তত বার দশেক শাবক প্রসব করেছে স্ত্রী হায়নাটি। কিন্তু প্রত্যেক বারই নিজের শাবক খেয়ে ফেলেছে স্ত্রী হায়না। কয়েক বছর আগে জন্মের পরে কয়েকটি শাবককে আলাদা করে রাখার ব্যবস্থা করেছিলেন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মায়ের দুধের অভাবে শাবকগুলির মৃত্যু হয়। বছর তিনেক আগে লালি নামে একটি শাবককে বাঁচানো সম্ভব হয়। কিন্তু সাড়ে তিন মাস বয়সী অপুষ্ট ‘লালি’-র পায়ের হাড় ভেঙে যাওয়ায় চিকিত্সার জন্য শাবকটিকে পাঠানো হয় আলিপুর চিড়িয়াখানায়। এখন লালি সুস্থসবল।
গত ৪ সেপ্টেম্বর মায়ের কোল থেকে উদ্ধার করে আলাদা এনক্লোজারে ঠাঁই হয়েছিল ভাদুর। তাঁরা জানাচ্ছেন, ভাদুর সঙ্গে আরও গোটা চারেক শাবক প্রসব করেছিল স্ত্রী হায়নাটি। এ বারও জন্মের দু’মাসের মধ্যে শাবকগুলিকে খেয়ে ফেলে হায়না মা। বাকি ছিল ভাদু। শাবকটিকে উদ্ধার করার পরে প্রাণি চিকিৎসক ও চিড়িয়াখানার কর্মীরা দিনরাত এক করে গত দু’মাস ধরে শাবকটির পরিচর্যা করছেন। ভাদুর খাদ্য তালিকায় রয়েছে কৌটোর দুধ, শিশুখাদ্য (নেস্টাম)। এ ছাড়া প্রতিদিন ছ’শো গ্রাম মুরগির মাংসও খায় সে।
আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিস সামন্ত বলেন, “ঝাড়গ্রামের চিড়িয়াখানাটির পরিবেশ এতটাই স্বাভাবিক ভাবে প্রাকৃতিক। তাই বন্যপ্রাণিদের স্বাভাবিক প্রজনন হচ্ছে। এটা খুবই সাফল্যের বিষয়।”