পরখ: সদ্য বসানো তৃতীয় লাইন পরীক্ষা, সর্ডিহায়। ফাইল চিত্র
আজ কেন্দ্রীয় সাধারণ বাজেটে রেল সংক্রান্ত দাবি কি মিটবে ঝাড়গ্রামের? প্রত্যাশায় রয়েছেন ঝাড়গ্রামবাসী।
প্রত্যাশার কারণ কুনার হেমব্রম। গত বছর লোকসভা ভোটে তৃণমূলের হাত থেকে ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রটি ১১ হাজারের কিছু বেশি ভোটে ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। জয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী কুনার হেমব্রম। সাংসদ হওয়ার পরে ঝাড়গ্রামের রেল সংক্রান্ত দাবিতে রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে দেখা করে দাবি সনদ জমা দিয়েছিলেন কুনার। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন সাংসদ।
বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লি থেকে ফোনে কুনার বলেন, ‘‘রেল সংক্রান্ত বিষয়ে এলাকাবাসীর দাবির বিষয়গুলি নিয়ে রেলমন্ত্রী ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জিএমের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আশা তো করছি, বাজেটে ঝাড়গ্রামের জন্য কিছু থাকবে। দেখা যাক।’’
গত বছরের গোড়ায় কুনারের নির্বাচনী প্রচারে গোপীবল্লভপুরে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। কুনার জিতলে ঝাড়গ্রাম থেকে গোপীবল্লভপুর হয়ে ওড়িশার সংযোগকারী রেলপথের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নির্মলা।
রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঝাড়গ্রাম-পুরুলিয়া রেলপথের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে প্রাথমিক সমীক্ষা হলেও ‘অলাভজনক প্রকল্পটি’ আপাতত ঠান্ডাঘরে রয়েছে। তবে গত বছর লোকসভা ভোটের প্রচারে ঝাড়গ্রাম-বান্দোয়ান রেলপথের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। পুরুলিয়া জেলার বান্দোয়ান বিধানসভা এলাকাটি ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। বান্দোয়ান বিধানসভা এলাকায় কোনও রেলপথ নেই। আশির দশকে আদ্রা থেকে বান্দোয়ান হয়ে ঝাড়গ্রাম রেলপথের দাবি উঠেছিল। আদ্রা-ঝাড়গ্রাম রেলপথ সংগ্রাম সমিতি-র এ ব্যাপারে দীর্ঘ আন্দোলনও করেছিল। সমিতির দাবি ছিল, ওই রেলপথ হলে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও ঝাড়গ্রাম জেলার পিছিয়ে পড়া ব্লকগুলির দ্রুত হারে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব। ঝাড়গ্রাম থেকে সরাসরি রেলপথে বান্দোয়ান যাওয়ার কোনও সুযোগ নেই। ঝাড়গ্রাম থেকে টাটানগর ও টামনা হয়ে অনেকটা ঘুরপথে পুরুলিয়া যেতে হয়। ঝাড়গ্রাম-পুরুলিয়ার মধ্যে হাতে গোনা এক-দু’টি লোকাল ও এক্সপ্রেস চলে। দীর্ঘপথে বিশেষত লোকাল ট্রেনে সময়ও লাগে বিস্তর।
বান্দোয়ান-ঝাড়গ্রামের মধ্যে রেলপথের বিষয়ে ২০১৫-১৬ সালে সমীক্ষা করেছিল দক্ষিণ-পূর্ব রেল। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রাম, বান্দোয়ান, ঝাড়খণ্ডের চাণ্ডিল হয়ে পটমদা পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটার প্রস্তাবিত রেলপথের সমীক্ষার রিপোর্ট রেলবোর্ডে জমা পড়েছিল। রিপোর্ট পাওয়ার পরে রেল বোর্ডের তরফে দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের কাছে ওই সমীক্ষা রিপোর্ট সম্পর্কে অতিরিক্ত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছিল। ২০১৮-র নভেম্বরে রেল বোর্ডের কাছে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত জবাবি-পত্র জমা পড়েছিল। রেলপথটি অলাভজনক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এক কর্তা বলছেন, ‘‘সরকার চাইলে কোনও এলাকার অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য ক্ষতি স্বীকার করেও নতুন লাইন অনুমোদন করতে করতে পারে। বিষয়টি এখন রেলবোর্ডের বিবেচনাধীন’’
অন্যদিকে, ঝাড়গ্রাম স্টেশন ছুয়ে দূরপাল্লার বহু ট্রেন চললেও দিল্লি, হরিদ্বার, পুরী ও মুম্বইগামী ট্রেন এখানে থামে না। দিল্লি, হরিদ্বার,
পুরী ও মুম্বইগামী চারটি ট্রেনের স্টপের দাবি দীর্ঘদিনের। এছাড়া খড়গপুর-টাটা শাখায় লোকাল ট্রেনের দাবিও রয়েছে।