নাড়াজোল কলেজে জয়া দত্ত। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের নীতি নির্ধারণ কমিটির বৈঠকে শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন শিক্ষাক্ষেত্রে রাজনৈতিক বাড়াবাড়ি বরদাস্ত করা হবে না, বন্ধ করতে হবে দুর্বৃত্তায়ন। কিন্তু সোমবারই পশ্চিম মেদিনীপুরে এসে কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের আধিপত্য কায়েম করার বার্তা দিয়ে গেলেন সংগঠনের রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্ত।
গোটা জেলার সব কলেজেই টিএমসিপি-র দখল। একমাত্র ব্যতিক্রম চাঁইপাট। এসএফআইয়ের দখলে থাকা চাঁইপাট কলেজের তৃণমূল সদস্যদের উদ্দেশে জয়া সরাসরি বলে বসলেন, “তোমরা রক্তগরম করে আন্দোলন শুরু কর। কলেজের কোনও কর্মীকেই পাত্তা দেওয়ার দরকার নেই।” ছাত্রনেতার এমন বক্তব্যকে উস্কানি মূলক বলেই মনে করছেন বিরোধীরা। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক প্রসেনজিৎ মুদি বলেন, ‘‘এরপর চাঁইপাট কলেজে অপ্রীতিকর কিছু ঘটলে তার দায় নিতে হবে জয়া দত্তকেই।’’ এমন আশঙ্কা করছেন টিএমসিপি-র নেতারাও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংগঠনের এক জেলা নেতা বলেই ফেললেন, “দিদি এই ভাবে কথা না বললেই পারতেন।”
চাঁইপাট কলজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিট সভাপতি রঞ্জন কর অবশ্য বলেন, “আসলে দিদি সমর্থকদের চাঙ্গা করলেন। যাতে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা কলেজের সংগঠনের উপর জোর দিই।” টিএমসিপি-র রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্তও বলেন, ‘‘সব ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে লড়াইয়ের বার্তাই দেওয়া হয়েছে। সদস্যদের বলা হয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে থাকতে হবে।’’ এসএফআই পরিচালিত চাঁইপাট কলেজ ইউনিটকেও এই বার্তাই দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি তিনি এও দাবি করেছেন যে, ওই কলেজের এসএফআই পরিচালিত ছাত্র সংসদের কয়েকজন ছাত্র প্রতিনিধি টিএমসিপিতে যোগ দিতে চেয়েছেন। বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বের বিবেচনাধীন।
সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরের একাধিক কলেজে পরিদর্শন করেন জয়া। দুপুরে নাড়াজোল রাজ কলেজের বৈঠকে চাঁইপাট কলেজের প্রসঙ্গ উঠে আসে। তবে এ দিনের জেলা সফরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছেন জয়া। বলেছেন, “ভুল বোঝাবুঝি থাকলে মিটিয়ে নিতে হবে।” বুঝিয়ে দেন, কোনও অন্যায় বরদাস্ত করা হবে না। গণ্ডগোল করলে বহিষ্কারের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। সোমবার দুপুরে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন জয়া। পরে ডেবরা কলেজে যান জয়া। সকালে গিয়েছিলেন ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজে।