লালগড়ে নওশাদ সিদ্দিকীর সভার ব্যানার। নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা ভোটের আগে এ বার জঙ্গলমহলে সংগঠন গড়ছে ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর দল ‘ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট’ (আইএসএফ)। সূত্রের খবর, জঙ্গলমহলের জনজাতি-মূলবাসী ও সংখ্যালঘুদের নিয়েই সংগঠনের খাতা খোলা হচ্ছে। আগামী শনিবার, ১৮ নভেম্বর লালগড়ের রামগড়ে সভাও করবেন নওশাদ।
আয়োজকরা মানছেন, আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদের নিয়ে জেলায় আইএসএফের সংগঠন গড়ে তুলতেই এমন সভা। রাজনৈতিক মহলেও জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক অবস্থান এবং সংবাদমাধ্যমে তাঁর বিবৃত্তি নিয়ে তৃণমূলের সমালোচনার মুখে পড়েছেন নওশাদ। এ বার ঝাড়গ্রামে তাঁর প্রথম সভা নিয়ে তৃণমূলের একাংশের দাবি, এর পিছনে গেরুয়া শিবিরের সমর্থন রয়েছে।
প্রশ্ন উঠছে, মন্ত্রী তথা ঝাড়গ্রামের বিধায়ক বিরবাহা হাঁসদার বিধানসভা এলাকার অন্তর্গত লালগড় ব্লকের রামগড়কেই কেন সভার জন্য বেছে নিয়েছেন নওশাদ। তৃণমূলের একাংশের ধারণা, জেলায় মন্ত্রী বিরবাহার যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। রাজ্য প্রশাসনেও তাঁর উত্তরোত্তর গুরুত্ব বাড়ছে। তিনি দলের এসটি সেলের রাজ্য সভানেত্রী। ফলে তাঁর বিধানসভা এলাকায় সভা করে শাসকদলকে বার্তা দিতে চাইছে আইএসএফ। আইএসএফের ঝাড়গ্রাম জেলা কমিটির অন্যতম আহ্বায়ক বন্দিরাম মান্ডি বলছেন, ‘‘এখনও আদিবাসী শিক্ষা সংক্রান্ত দাবিগুলি যথাযথ ভাবে পূরণ হয়নি। পরিকাঠামোও তথৈবচ। বিধানসভার ভিতরে ও বাইরে আদিবাসীদের শিক্ষা সংক্রান্ত দাবি দাওয়া নিয়ে সরব হয়েছেন নওশাদ সিদ্দিকী। আদিবাসীদের পাশে তিনি রয়েছেন। সেই কারণেই শবিবার সভায় তাঁকে সংবর্ধনা জানানো হবে।’’
আগে ঝাড়খণ্ড মুক্তিমোর্চা করতেন বন্দিরাম। এ রকমই বিভিন্ন সংগঠনে থাকা আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদের নিয়ে আইএসএফের জেলা কমিটি গঠনের উদ্যোগ করা হচ্ছে। রামগড় অঞ্চলে তৃণমূলের কয়েকজন প্রাক্তন নেতা-কর্মী এখন গেরুয়া শিবিরে। ফলে তৃণমূলের আশঙ্কা, এর পিছনে ‘গভীর চক্রান্ত’ রয়েছে। বন্দিরাম অবশ্য জানাচ্ছেন, নওশাদ আদিবাসী-মূলবাসীদের প্রকৃত বন্ধু। সঙ্গে জুড়ছেন, ‘‘বীরভূমের দেউচা পাঁচামি প্রস্তাবিত কয়লাখনি ও পুরুলিয়ার ঠুরগা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ার নামে আদিবাসীদের জল-জমি-জঙ্গল থেকে উচ্ছেদের চক্রান্ত হচ্ছে।