—ফাইল চিত্র।
স্যানিটাইজ়ারের কয়েক হাজার বোতল কিনেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ। বোতলগুলিতে কোনও ‘লেবেল’ নেই! না আছে ‘ম্যানুফ্যাকচারিং ডেট’, না আছে এক্সপায়ারি ডেট। নেই ব্যাচ নম্বরও! কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে ওই বোতলগুলি কেনা হয়েছে।
করোনা-কালে এমন স্যানিটাইজ়ার কেনায় জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি তথা বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বেশি দাম দিয়ে নিম্নমানের স্যানিটাইজ়ার কেনায় আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে। নিশ্চয়ই কাটমানির ব্যাপার ছিল। আমরা তদন্ত দাবি করছি।’’ তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ অবশ্য দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করেন, ‘‘নিয়মমাফিক দরপত্র ডেকেই স্যানিটাইজ়ার কেনা হয়েছে।’’ আর সহ-সভাধিপতি তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘যে বৈঠকে স্যানিটাইজ়ার কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সেখানে আমি ছিলাম না।’’
করোনা মোকাবিলায় কয়েক কোটি টাকা পেয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ। রাজ্য সরকারই এই টাকা দিয়েছে। জানা যাচ্ছে, কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে কয়েক হাজার স্যানিটাইজ়ারের বোতল কিনেছে জেলা পরিষদ। বেশিরভাগ বোতলই ৫০ মিলিলিটার এবং ১০০ মিলিলিটারের। কিছু বোতল জেলা পরিষদ সদস্যদের এবং কিছু কর্মাধ্যক্ষদের দেওয়া হয়েছে বিতরণের জন্য। কিছু বোতল পঞ্চায়েত সমিতিতে পাঠানো হয়েছে। একাধিক সংস্থার থেকে স্যানিটাইজ়ার কেনা যারা স্থানীয়স্তরেই কাজ করে।
জেলা পরিষদের এক কর্মাধ্যক্ষ অবশ্য বলেন, ‘‘এই সামগ্রী যে ‘লোকাল পারচেজ’ বা স্থানীয়ভাবে কেনা যাবে না-সরকারি নির্দেশে এটা বলা নেই। আর লেবেল নেই মানেই এর মান খারাপ, এটা ঠিক নয়!’’ জেলা পরিষদের অন্দরেই অবশ্য ভিন্ন মত রয়েছে। জেলা পরিষদের অন্য এক কর্মাধ্যক্ষ মানছেন, বোতলগুলিতে অন্তত প্রস্তুতকারী সংস্থার নাম থাকা উচিত ছিল। তাঁর কথায়, ‘‘এখন তো স্বনির্ভর দলগুলিও স্যানিটাইজ়ার তৈরি করছে। তেমন হলে কোনও এক বা একাধিক স্বনির্ভর দলের কাছ থেকেও এই সামগ্রী কেনা যেতে পারত।’’
লেবেলবিহীন স্যানিটাইজ়ার সরবরাহের কারণ হিসেবে সময়ের অভাবকেই সামনে আনছে সরবরাহকারী সংস্থাগুলি। এক সরবরাহকারী সংস্থার প্রধান সুতীর্থ সাউ বলেন, ‘‘কম সময়ের মধ্যে সরবরাহ করতে হয়েছে। তাই কিছু বোতলে লেবেলিং করা হয়নি!’’