প্রতীকী ছবি।
শুভেন্দু অনুগামী নেতাদের বিভিন্ন পদ থেকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই অবস্থায় নিজের নিজের পদ ধরে রাখতে মরিয়া দাদার ‘ঘনিষ্ঠ’ শ্রমিক নেতারা। রাতারাতি শ্রমিক সংগঠনের কার্যালয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ছবিযুক্ত ফ্লেক্স রাখতে শুরু করেছেন তাঁরা। শ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ, এতদিন মমতা ব্যানার্জির ছবি সহ ফ্লেক্স হলদিয়ার শ্রমিক নেতাদের অফিসে দেখা যায়নি। ইদানীং চাপে পড়ে নেতারা শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি-সহ ফ্লেক্স লাগাচ্ছেন। তৃণমূল নেতৃত্বের ধারণা, পদ টিকিয়ে রাখতে এটা নেহাতই রাজনৈতিক কৌশল।
উল্লেখ্য, শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে দোলাচলে তৃণমূল নেতৃত্ব। আলাপ-আলোচনার পর এখনও শুভেন্দু কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা না করলেও ‘চাইলে কেউ দল থেকে বেরিয়ে যেতে পারেন’ বলে মন্তব্য ইতিমধ্যেই শোনা গিয়েছে শীর্ষ নেতৃত্বের গলায়। শুভেন্দু অনুগামী ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করাও শুরু হয়েছে। দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে পদ খোয়াতে হয়েছে অনেককে। এদিকে শিল্পশহর হলদিয়ায় শিল্প সংস্থাগুলির শ্রমিক সংগঠনের রাশ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শুভেন্দু অনুগামীদের হাতে ছিল। দিন দুয়েক আগে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেত্রী দোলা সেন। সেখানে দলবিরোধী কার্যকলাপ বরদাস্ত করা হবে না বলে বার্তা দিয়েছেন তিনি। তারপরেই কার্যত কার্যালয়গুলিতে মুখ্যমন্ত্রীর ছবিযুক্ত ফ্লেক্স টাঙানো শুরু করেছেন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। স্থানীয়দের একাংশের মতে, শিল্পসংস্থার গেটগুলির সঙ্গে শ্রমিক নেতাদের পকেটের যোগাযোগ রয়েছে। গেটে থাকলে তবেই অর্থ মেলে। কাউকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা তোলা যায়। তারপরে ঠিকাদারের কাছ থেকে কাটমানি। ফলে এত সহজে গেট-এর কর্তৃত্ব ছেড়ে দিতে নারাজ শ্রমিক নেতারা। আর সে জন্যই সময়বুঝে এমন পদক্ষেপ তাদের।
তবে এটা শুভেন্দু অনুগামীদের রাজনৈতিক চাল বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতাদের অনেকে। হলদিয়া টাউন ব্লকের সহ-সভাপতি দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, ‘‘দলবিরোধী কার্যকলাপ করা যাবে না বলে ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর তরফে বার্তা দেওয়া হয়েছে। আমরাও কে কী করছে নজর রাখছি। ছবি পাল্টে ফেলাটা আসলে দাদার অনুগামীদের রাজনৈতিক চাল। নিজেদের স্বার্থে তারা বাইরে দিদির অনুগামী বলে প্রমাণের চেষ্টা করলেও আসলে ভিতরে ভিতরে যে দাদার অনুগামী এটা হলদিয়ার মানুষ জানে।’’