Rabindra Jayanti Celebration

ছুটিতেও রবি-প্রণাম স্কুলে

করোনা পরিস্থিতির জন্য দু’বছর স্কুল বন্ধ ছিল। তখন স্কুলে রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন করা যায়নি। গত বছরও গরমের ছুটি পড়ে যাওয়ায় অনেক স্কুলে দিনটি পালন হয়নি। এ বারও সেই পরিস্থিতি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০২৩ ০৭:২২
Share:

পলাশি প্রাথমিক স্কুলে কবি প্রণাম (বাঁ দিকে)। রবীন্দ্র জয়ন্তীর দিনে তালাবন্ধই থাকল সাহসপুর প্রাথমিক স্কুল (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র।

রাজ্য সরকার ও সরকারি পোষিত স্কুলে গরমের ছুটি চলছে। তবে মঙ্গলবার, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিবস পালনে অবশ্য ছুটি বাধা হল না অনেক স্কুলেই।

Advertisement

এর আগে করোনা পরিস্থিতির জন্য দু’বছর স্কুল বন্ধ ছিল। তখন স্কুলে রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন করা যায়নি। গত বছরও গরমের ছুটি পড়ে যাওয়ায় অনেক স্কুলে দিনটি পালন হয়নি। এ বারও সেই পরিস্থিতি। ছুটির জন্য স্কুলে রবীন্দ্র জয়ন্তী পালনে কোনও সরকারি নির্দেশিকাও ছিল না। তার মধ্যেও এদিন যে সব স্কুল দিনটি পালন করেছে, তারা তা নিজেদের উদ্যোগেই করেছে। তবে ইচ্ছে থাকলেও অনেক স্কুল দিনটি পালন করতে পারেনি। তেমনই এক স্কুলের প্রধান শিক্ষক শোনাচ্ছেন, ‘‘প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। তবে শেষ পর্যন্ত এ বারের রবি-উৎসব করা গেল না!’’ আরেক স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলছেন, ‘‘কয়েকজন শিক্ষক স্কুলে গিয়ে নিজেদের মতো করে কবিগুরুকে স্মরণ করেছি।’’ আরেক প্রধান শিক্ষকের আক্ষেপ, ‘‘হস্টেলে পড়ুয়াই তো নেই! কাদের নিয়ে করব রবীন্দ্র জয়ন্তী!’’

মেদিনীপুর গ্রামীণের পলাশি প্রাথমিক স্কুল থেকে কেশপুরের ধলহারা প্রাথমিক স্কুল, জেলার বেশ কিছু স্কুলে রবীন্দ্র জয়ন্তী পালনের অনুষ্ঠান হয়েছে। পলাশি প্রাথমিকের পড়ুয়া সোহম ঘোষ, তন্ময় কারক, বৃষ্টি রাউৎ, অপর্ণা সিংরা এদিন স্কুলে এসে অনুষ্ঠান করেছে। ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সৌম্যসুন্দর মহাপাত্র বলছেন, ‘‘সংখ্যায় কম হলেও কিছু পড়ুয়া স্কুলে এসেছিল।’’ কলেজগুলিতেও রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন হয়েছে। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠান হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের উদ্যোগে দিনটি পালন হয়েছে শালবনির গোদাপিয়াশাল মহাত্মা গান্ধী স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ে। রবীন্দ্র মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠান হয়েছে। এদিন স্কুলে রবীন্দ্রনাথের আবক্ষ মূর্তি উন্মোচন হয়েছে। মূর্তি উন্মোচন করেন জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক বরুণ মণ্ডল।

Advertisement

দাসপুরের বরুণা সৎসঙ্গ হাইস্কুলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুজিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পাঁচ শতাধিক ছাত্রছাত্রী উপস্থিত ছিল।” দাসপুরের খেপুত হাইস্কুলের পক্ষ থেকে দু’টি গাড়িকে ফুল দিয়ে সাজিয়ে খেপুত-সহ লাগোয়া গোপীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড, বারাসত বাজার সহ একাধিক গ্রামে ঘুিরয়ে অনুষ্ঠান হয়। চন্দন ভট্টাচার্য নামে ওই স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, “স্কুল ছুটি বলে রবীন্দ্র জয়ন্তী হবে না, এটা হতে পারে না।’’ দাসপুরের রাধাকান্তপুর, ঘাটালের যোগদা সৎসঙ্গ হাইস্কুল, লছিপুর হাইস্কুল চন্দ্রকোনার জিরাট হাইস্কুল-সহ ঘাটাল মহকুমার একাধিক স্কুলেই দিনটি পালিত হয়। দাঁতন ভাগবতচরণ হাইস্কুলেও দিনটি পালিত হয়। প্রধান শিক্ষক অরবিন্দ দাসের কথায়, ‘‘বিদ্যালয়ে বিশ্বকবির মূর্তি আছে। পড়ুয়াদের ছাড়া এই দিনটি পালন করা কতটা যুক্তিযুক্ত!’’

খড়্গপুরের জনকল্যাণ বিদ্যায়তন, সবং হাইস্কুল, ডেবরা হরিমতি হাইস্কুলের মতো খড়্গপুর মহকুমার বেশ কিছু স্কুলেও পালন হয়েছে। সবং হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অদিতিনন্দন রাজ বলেন, "ছাত্রাবাসে যে ১০-১৫ জন পড়ুয়া আছে তাদের নিয়েই দিনটি পালন হয়েছে।" ডেবরার হরিমতি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক তমাল বসু বলেন, "রবীন্দ্রমূর্তিতে মাল্যদান করেই দিনটি পালন করা হয়েছে। স্কুল খুললে অনুষ্ঠান করব।"

ঝাড়গ্রাম ব্লকের বাঘঝাঁপা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভবতোষ ভৌমিক গরমের ছুটিতে বাড়ি যাননি। স্কুলের একটি ঘরে থেকে দু’বেলা পড়ুয়াদের পড়া দেখিয়ে দিচ্ছেন তিনি। মঙ্গলবার তিনি ও আরও দুই সহ শিক্ষকের উদ্যোগে ও গ্রামবাসীর সহযোগিতায় ওই স্কুলে রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন করা হল। সেখানকার পড়ুয়ারা ডেঙ্গি সচেতনতা ও প্লাস্টিক পোড়ানোর বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক পদযাত্রা করে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে জমা জল ফেলে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়। চলতি মাসে স্কুলের ৯ জন পড়ুয়ার জন্মদিন। তাদের জন্মদিনও পালন করা হয়। গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের বৈতালপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সুখময় পান্ডা ও সহ শিক্ষক সরোজ বেরা রবীন্দ্রনাথের জীবন নিয়ে আলোচনা করেন। ঝাড়গ্রাম কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশন চত্বরেও রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করা হয়। প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত জানান, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পড়ুয়াদের উপস্থিতি ভালই ছিল। ঝাড়গ্রাম শহরের ননীবালা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা অরুন্ধতী সেন জানান, প্রতিটি ক্লাসের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বিশ্বকবিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। স্কুল খুললে অনুষ্ঠান হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement