দিলীপের নামে পোস্টার। — ফাইল চিত্র।
বিজেপির আদি বনাম নব্যের ‘লড়াই’। আর তার জেরে দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি ও সাংসদ দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে পোস্টার পড়লো এগরায়। বুধবার সাহাড়া পঞ্চায়েতে বিজেপির বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি কর্মসূচির দিনেই দলীয় সাংসদের বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ায় অস্বস্তিতে বিজেপি নেতৃত্ব। কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
বিধানসভা নির্বাচনে হারের পর এগরায় আদি ও নব্য বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামনে এসেছিল। তারপর যত সময় এগিয়েছে সেই দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়েছে। বিধানসভায় হারের পিছনে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব দলীয় কোন্দলকেই দায়ী করেছিলেন। এবার সেই দ্বন্দ্বের পরিণামে দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির নামে পোস্টার ঘিরে নতুন বিতর্ক তৈরি হল। এ দিন সকালে সাহাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে অফিস সংলগ্ন শীপুরে ভারতীয় জনতা স্বরাজ সংগঠনের নামে এই পোস্টার পড়ে। পোস্টারে আদি ও নব্যের গোষ্ঠী কোন্দলের প্রেক্ষিতে সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পরে সাহাড়া এলাকায় দিলীপের দেখা পাওয়া যায়নি বলে দাবি করা হয়েছে। সাংসদ তহবিলে এলাকায় কোনও উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি। নতুন প্রকল্পের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হলেও তা মঞ্জুর করা হয়নি। সবচেয়ে বড় অভিযোগ, দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূলের নেতাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মণ্ডল সভাপতি বিমল শিটের বিরুদ্ধে সম্মেলন করার অভিযোগ উঠেছে। পুরনো কর্মীদের পদ থেকে সরিয়ে তৃণমূল ঘনিষ্ঠদের পদে বসানো হয়েছে। অভিযোগ, বিধানসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী তরুণ মাইতির কাছ থেকে টাকা নিয়ে বিজেপিকে হারিয়েছে এমন নেতাদের দলীয় পদ দেওয়া হয়েছে। বিজেপি করার ‘অপরাধে’ যাঁরা মার খেয়েছেন, মিথ্যা মামলা হয়েছে যাঁদের বিরুদ্ধে তাঁদের পিছনে সারিতে রাখা হয়েছে। এমনই নানা অভিযোগ তোলা হয়েছে পোস্টারে।
বুধবার সকালে পঞ্চায়েত অফিস সংলগ্ন এলাকায় এই পোস্টার ঘিরে শোরগোল পড়ে। বিকেলে পঞ্চায়েত অফিসে আবাস যোজনার দুর্নীতির প্রতিবাদে বিজেপি স্মারকলিপি ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলিন কাঁথির বিধায়ক সুমিতা সিংহ। বিক্ষোভ কর্মসূচির আগে দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে পোস্টারে দলীয় কোন্দলে অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির।
পোস্টার বিতর্কে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু ওই পোস্টারে কারও নাম নেই। একটি সংস্থার নাম রয়েছে। আমি খোঁজ নিচ্ছি। অনেক সময় টাকার জন্য, পুলিশের চাপে, শাসক দলের চাপেও অনেকে এমন কাজ করে। হতে পারে এক্ষেত্রেও তেমনই হয়েছে। তবে দলের কেউ আছে কিনা খোঁজ নেব।’’
দিলীপের বিরুদ্ধে পোস্টার পড়া নিয়ে ছন্নছাড়া দল বলে বিজেপিকে পাল্টা কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। এগরা-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি বিজন বিহারী সাউ বলেন, ‘‘তৃণমূল একটা ছন্নছাড়া দল। সাধারণ মানুষের উন্নতির থেকে নিজেদের উন্নতির ব্যাপারে বেশি চিন্তা করে। সাংসদ হলেও দিলীপবাবু এলাকায় কোনও উন্নয়ন করেননি। ভোট নিয়ে এগরার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তাঁদের কর্মীরাই এখন সেই প্রশ্ন তুলছেন'।’’