‘ওটা এ বার দিয়ে দিন’।
খাওয়ার ফাঁকেই ঘনঘন আসছে অর্ডার। দিন হোক বা রাত, অভাব নেই খদ্দেরের। নির্দিষ্ট হাঁড়ি বা প্যাকেটে আসছে পানীয়। আর ধাবার পিছনে খাটিয়া পেতে বা মাটিতে বসেই দিব্যি চলছে চোলাইয়ের নেশা।
চোলাইয়ের রমরমা ঠেকাতে বিভিন্ন জায়গায় চলছে অভিযান। একাধিক ঠেকেও অভিযান চালাচ্ছে আবগারি দফতর।
ঝাড়গ্রামে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার হয়েছে একের পর এক চোলাইয়ের ড্রাম। তবে অভিযোগ, রাস্তার ধারে থাকা ধাবা ও হোটেলগুলিতে নজর নেই দফতরের।
ঘাটাল-সহ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় অনেক ধাবা আছে। এদের বেশিরভাগ ধাবায় প্রশাসনের কোনও বৈধ অনুমতি নেই। সে পুর-এলাকায় হোক কিংবা পঞ্চায়েতে। অভিযোগ, জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়কের ধারে সরকারি জমি দখল করেই চলছে এমন ধাবা-হোটেলের ব্যবসা। বেশ কিছু ধাবা অবশ্য ব্যক্তিগত জমিতেও তৈরি হয়েছে। তবে বেশিরভাগ ধাবাতেই চলে চোলাই কারবার। রাস্তার ধারে ভোর থেকেই চোলাইয়ের নির্দিষ্ট ক্রেতারা হাজির হন। সেখানেই দড়ির খাট কিংবা ধাবার পিছনে মাটিতে বসেই দিব্যি চোলাই ঠেকের রমরমা কারবার চলে।
অভিযোগ, পুলিশ বা আবগারি দফতরের পক্ষ থেকে তেমন ভাবে ধাবা গুলিতে অভিযানও হয় না। এর ফাঁকেই রাস্তার ধারের হোটেল ও ধাবাগুলিতে চোলাই ব্যবসা ফুলে ফেঁপে উঠছে।
কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? জেলা আবগারি দফতরের সুপারিন্টেনন্ডেন্ট একলব্য চক্রবর্তী বলেন, “রাস্তার ধরে ধাবা-হোটেলেও অভিযান চলছে। বহু ধাবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।” আবগারি দফতর যাই দাবি করুক, গত রবিবার ক্ষীরপাই-আরামবাগ সড়কের ধারে চন্দ্রকোনার এক ধাবায় গিয়ে দেখা গেল, সেখানে দড়ির খাটে আট-দশ জন বসে আছেন। দিব্যি চলছে খাওয়া-দাওয়া। চাহিদা ও জোগানের কোনও খামতিও নেই। খাটের এক কোণে পড়ে রয়েছে চোলাইয়ের প্যাকেট। শেষ হতেই ফের অর্ডার।
এক ধাবা মালিকের দাবি, “এটা বেআইনি আমরা জানি। কিন্তু এখানে সব খদ্দেরই আসে। তাই অন্য মদের সাথে চোলাইও রাখতে বাধ্য হই। তা না হলে খদ্দের ধরে রাখব কী করে?” ঘাটালের বরদা-ইড়পালা সড়কের ধারের এক ধাবা কর্মীরও দাবি, “এখন তো চোলাইয়ের ঠেক গুলিতে ব্যাপক ধরপাকড় চলছে। তাই চোলাই খদ্দেরদের একাংশ চুপিসাড়ে ধাবায় চলে আসছেন।’’
স্থানীয় বাসিন্দা থেকে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বহু ধাবাতেই চব্বিশ ঘণ্টা চোলাই মেলে। তবে তার টানে আসা লোকের সংখ্যাও কম নয়। আবগারি দফতরের এক আধিকারিকও মানছেন, “পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বেশ কিছু ধাবায় চোলাই বিক্রি হয়। এ বার সেগুলিতেও অভিযানে পদক্ষেপ করা হবে।”