ফাইল চিত্র।
প্রাচীন ভারতীয় শাস্ত্রে বিজ্ঞানের ভিত্তি কতটা, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ‘সেন্টার অফ এক্সিলেন্স ফর ইন্ডিয়ান নলেজ সিস্টেম’ গড়ে প্রাচীন শাস্ত্রের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি খুঁজতে গবেষণা চালাবে খড়্গপুর আইআইটি।
শুক্রবার প্রতিষ্ঠানের ‘ভারত তীর্থ’ শীর্ষক ওয়েবিনারের সূচনায় এ কথা ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিওয়াল নিশঙ্ক। রবিবার পর্যন্ত চলবে ভারতীয় জ্ঞানপদ্ধতির নানা দিক নিয়ে এই আলোচনা। মূলত অর্থশাস্ত্র, সংস্কৃত মান্য ভাষা প্রক্রিয়া, বৈদিক ও প্রাচীন ভারতীয় গণিত-সংখ্যা পদ্ধতি, আয়ুর্বেদ, বীজগণিত ও জ্যামিতি, রসায়ন, জ্যোতির্বিদ্যা, প্রকৃতিবিদ্যার মতো নানা বিষয়ে আলোচনা হবে। ভবিষ্যতে এই বিষয়গুলির বৈজ্ঞানিক সত্যতা যাচাইয়ে গবেষণা চালাবে আইআইটির ওই উৎকর্ষ কেন্দ্র। ওয়েবিনারের সূচনায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছেন, “আইআইটি খড়গপুর বর্তমান সময়ে ভারতের ভাবনা ও চ্যালেঞ্জগুলিকে অন্তর্নিবেশ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। সেই চেষ্টায় ভারত তীর্থ ও গবেষণার মতো উদ্যোগ সঠিক পদক্ষেপ।”
এই উদ্যোগের আয়োজক সম্পাদক তথা স্থাপত্যবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক জয় সেন বলেন, “সপ্তদশ-অষ্টদশ শতকের পরে প্রাচীন শাস্ত্র কিছুটা দমে গিয়েছিল। তখন থেকে ব্রিটিশদের শিল্প বিপ্লবের বিজ্ঞানের দিকে আমাদের ঝোঁক এসেছে। সেটাও মন্দ নয়। তবে দেশের পাঁচ হাজার বছরের পুরনো প্রাচীন শাস্ত্র গুরুত্ব হারিয়েছে। অনেকের আস্থা উঠে গিয়েছে। অথচ তার মধ্যে ভাল দিকও থাকতে পারে। তাই সেগুলি নতুন করে ফিরে পেতে আমাদের এই কেন্দ্র কাজ করবে।” আইআইটি খড়্গপুরের অধিকর্তা বীরেন্দ্রকুমার তিওয়ারির কথায়, “ভারতীয় ঐতিহ্যের প্রতি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের আগ্রহ পুনরুদ্ধার করতে ভারতীয় জ্ঞান পদ্ধতির স্বতন্দ্র কেন্দ্র গড়ে ইতিবাচক ও বিস্তৃত গবেষণার মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।”
‘সন্ধি’ প্রকল্পের মাধ্যমে ইতিমধ্যে দেশের স্থাপত্য, শিল্পকলার নানা দিক নিয়ে গবেষণা চলছে। শুরু হয়েছে লোকশিল্প ও সংস্কৃতির গবেষণা। এই ক্ষেত্রকে আরও প্রসারিত করে প্রাচীন শাস্ত্র নিয়ে উৎকর্ষ কেন্দ্র গড়ে আলোচনা করবে আইআইটি। প্রাথমিকভাবে তিনটি লক্ষ্যে এই কেন্দ্র কাজ করবে। প্রথম পর্যায়ে প্রাচীন শাস্ত্রকে যুগোপযোগী করে স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মেলবন্ধন ঘটানো হবে। তৃতীয় ও গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় হল— প্রাচীন শাস্ত্র নিয়ে উচ্চমানের গবেষণা করে তা প্রতিষ্ঠা ও প্রকাশের দিকে নিয়ে যাওয়া। এই পৌঁছে দেওয়ার কাজ দেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষা ও সংস্কৃতে করার প্রস্তাব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী।