প্রতীকী ছবি।
প্রহরী বিহীন রেলগেটে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক আইআইটি পড়ুয়ার। রবিবার রাত ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে খড়্গপুর আইআইটি সংলগ্ন পুরী গেটে। ওই দিনই রেলগেটের অদূরে লাইনের ওপর মৃতদেহটির খোঁজ মেলে। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া যায় একটি সাইকেল, মোবাইল এবং ল্যাপটপ। পরে রেল পুলিশ গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে।
সোমবার সকাল পর্যন্ত মৃতের পরিচয় জানা না গেলেও, পরে ওই যুবকের নাম চন্দ্রমোহন গোস্বামী (২২) বলে জানায় রেল পুলিশ। মৃতের বাড়ি দিল্লিতে। চন্দ্রমোহন আইআইটির ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল কমিউনিকেশনের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র বলে দাবি করেছে আইআইটি। রেল পুলিশের অনুমান, খড়্গপুরগামী যশবন্তপুর-ভাগলপুর অঙ্গ এক্সপ্রেসের ধাক্কায় ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তবে দুর্ঘটনার পিছনে আরও কোনও কারণ রয়েছে কি না, জানতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা ক্যান্টিনের খাবারের স্বাদ বদলাতে হামেশাই আইআইটি ক্যাম্পাসের বাইরের একাধিক রেস্তোরাঁয় যাতায়াত করেন। বেশ কয়েকটা রেস্তোরাঁ যাতায়াতে পার হতে হয় পুরী গেটের প্রহরী বিহীন রেলগেট। আইআইটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, চন্দ্রমোহন প্রতিষ্ঠানের রাধাকৃষ্ণান হলে (হস্টেল) থাকতেন। এবং রবিবার রাতে নৈশভোজ সারতেই প্রতিষ্ঠানের বাইরে বেরিয়েছিলেন তিনি। খাওয়া-দাওয়া সেরে সাইকেলে চড়ে আইআইটিতে ফিরছিলেন চন্দ্রমোহন। সেই সময়েই ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয় ওই ছাত্রের। পুলিশ প্রথমে যুবকের নাম জানতে পারেনি। পরে আইআইটি কর্তৃপক্ষ মৃতদেহ ও উদ্ধার হওয়া ল্যাপটপ, মোবাইল দেখে চন্দ্রমোহনের পরিচয় জানতে পারে। যদিও এ দিন বিষয়টি নিয়ে রাধাকৃষ্ণান হল ও ইলেকট্রিক্যাল কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়ুয়ারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
আইআইটি পড়ুয়ার এই মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, তা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে। জানা গিয়েছে, চন্দ্রমোহনের সঙ্গেই ওই রেস্তোরাঁয় গিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন পড়ুয়ারা। তাঁরা আগে আইআইটিতে ফিরে গেলেও, চন্দ্রমোহন একা রেস্তোরাঁ থেকে সাইকেলে চড়ে প্রতিষ্ঠানে ফিরছিলেন। প্রাথমিক তদন্তের পর রেল পুলিশের অনুমান, প্রহরী বিহীন রেলগেট পার হওয়ার সময় অসতর্ক থাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। তবে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখছে রেল পুলিশ।
রেল পুলিশের সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেন, “আমরা ট্রেনের ধাক্কায় মৃত এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করেছি। আইআইটি লিখিত ভাবে জানিয়েছে, ওই যুবক তাঁদেরই ছাত্র চন্দ্রমোহন গোস্বামী। কী ভাবে ট্রেনের ধাক্কায় ওই যুবক মারা গিয়েছেন তার জানার জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে।” বিষয়টি নিয়ে আইআইটির রেজিস্ট্রার ভৃগুনাথ সিংহ বলেন, “দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। পড়ুয়ারা হামেশাই বাইরের রেস্তোরাঁয় খাওয়ার জন্য যাতায়াত করে। চন্দ্রমোহন তেমনই একটি রেস্তোরাঁ থেকে ফেরার সময় ট্রেনের ধাক্কায় মারা গিয়েছে। আমরা ওঁর পরিবারকে খবর দিয়েছি। তাঁরা খড়গপুরো আসছেন।”