নতুন শয্যা রাখার প্রস্তুতি বড়মায়। নিজস্ব চিত্র
পাঁচতলা ভবনের তৃতীয় তলায় ১০০ শয্যা দিয়ে গত এপ্রিলে করোনার সঙ্গে লড়াই শুরু হয়েছিল পাঁশকুড়ার মেচগ্রামে বড়মা হাসপাতালে। লেভেল ৩ এবং ৪ পর্যায়ের ওই করোনা হাসপাতালে দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের আক্রান্তদের চিকিৎসা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু কয়েকদিনে যে হারে পূর্ব মেদিনীপুরে করোনা আক্রান্তের হদিস মিলছে তাতে চিন্তিত স্বাস্থ্য দফতর। তাই এখন থেকেই বড়মার শয্যা সংখ্যা বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং জেলা প্রশাসন। হাসপাতাল সূত্রের খবর সম্প্রতি পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বড়মায় ৩০টি নতুন শয্যা পাঠিয়েছেন। যদি শয্যা সংখ্যা বাড়াতে হয়, সেই কথা মাথায় রেখে হাসপাতালের দোতলা এবং পাঁচতলায় দুটি ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। বড়মা হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আফজল শা বলেন, ‘‘বড়মা হাসপাতালে ২১০ জন রোগীর চিকিৎসার মতো পরিকাঠামো রয়েছে। এখন ১০০ বেডের অনুমতি রয়েছে। তবে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী আরও ৩০টি শয্যা পাঠিয়েছেন। প্রয়োজনে হাসপাতালের আরও দুটি ওয়ার্ড খুলে দেওয়া হবে চিকিৎসার জন্য।’’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি জেলায় ফিরছেন হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক। নতুন করে জেলায় যে সব লোকজন করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের বেশিরভাগই ওই শ্রমিকদের মধ্যে পড়েন। তাঁদের চিকিৎসার জন্য আনা হচ্ছে বড়মায়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বড়মা হাসপাতালে ২১০ জন রোগীর চিকিৎসার পরিকাঠামো রয়েছে। আইসিইউ রয়েছে ২০টি, ভেন্টিলেটর রয়েছে ১০টি এবং বহনযোগ্য এক্স-রে মেশিন রয়েছে তিনটি। রয়েছে পর্যাপ্ত চিকিৎসক এবং নার্সও। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার মোট ৪৮ জন করোনা আক্রান্ত এই হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩২ জন করোনা আক্রান্ত। তবে যেভাবে কয়েকদিনের মধ্যে করোনা আক্রান্তের হার বেড়ে গিয়েছে, তাতে বড়মায় নতুন শয্যা প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। বড়মা হাসপাতালের নোডাল অফিসার শচীন্দ্রনাথ রজক বলেন, ‘‘বড়মায় ২০০ জন রোগীর চিকিৎসার মতো পরিকাঠামো ও সরঞ্জাম রয়েছে। এখন ১০০ বেড রয়েছে। প্রয়োজনে আরও বেড পাঠানো হবে।’’
উল্লেখ্য, করোনা চিকিৎসার কোনও রকম পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই বড়মার চিকিৎসকেরা একের পর এক করোনা রোগীদের সুস্থ করেছেন। গত ২০ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’র এক প্রতিনিধি বড়মা হাসপাতাল পরিদর্শন করতে আসেন এবং সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন।