বিধায়ক হিসেবে সবংয়ে শেষ সভায় মানস ভুঁইয়া।নিজস্ব চিত্র
সবং তাঁর রাজনীতির আঁতুড়ঘর। তাই রাজ্যসভার প্রার্থী হলেও সবংকে তিনি কোনও দিন ভুলব না। বিধায়ক হিসাবে নিজের খাসতালুকে শেষ কর্মী বৈঠকে এমন আবেগের কথাই শোনা গেল মানস ভুঁইয়ার গলায়।
রবিবার সবং হাইস্কুলে তৃণমূলের ব্লক কমিটির পক্ষ থেকে এই কর্মী বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। আজ, সোমবার বিধায়ক পদ থেকে তাঁর ইস্তফা দেওয়ার কথা। তৃণমূলের পক্ষ থেকে তাঁকে রাজ্যসভার সাংসদ পদপ্রার্থী করা হয়েছে। তার আগে এ দিনের কর্মী বৈঠকে বিধায়ক হিসাবে শেষবারের জন্য হাজির হয়েছিলেন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসা সবংয়ের প্রবীণ নেতা মানসবাবু। সেখানেই সবংকে না ভোলার বার্তা দেন। এমনকী পদের পরিবর্তন হলেও তিনি আগামীদিনেও দেশবাসীর পাশাপাশি সবংয়ের জন্য কাজ করবেন বলে জানান তিনি। মানসবাবু বলেন, “আমার কাজের জায়গার পরিবর্তন হয়। কিন্তু কাজের দর্শনে কোনও পরিবর্তন হয়না। আমি আপনাদের সঙ্গে থাকব, এটাই আমার রাজনৈতিক দর্শন।” এ দিন মানসবাবুকে তৃণমূলের ব্লক কমিটির পক্ষ থেকে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়।
মানসবাবু-সহ সবংয়ের এক ঝাঁক কংগ্রেস নেতা তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে বছর ঘুরতে চললেও এলাকায় তৃণমূলের নতুন-পুরনো দ্বন্দ্বে দাঁড়ি পড়েনি। উল্টে বারবারই বচসা-মারধরে বেআব্রু হয়েছে দ্বন্দ্ব। এ দিন অবশ্য মানস বিরোধী তৃণমূল নেতাদের মঞ্চে দেখা গিয়েছে। কর্মী বৈঠকে হাজির ছিলেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি প্রভাত মাইতি, জেলা কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি, যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আবু কালাম বক্স, নেতা স্বপন মাইতিরা। প্রভাতবাবু বলেন, “সবং তথা রাজ্যের রাজনীতির সীমা টপকে মানসবাবু জাতীয় রাজনীতিতে যাচ্ছেন। এতে আমাদের সবং ব্লকেও উন্নয়নের বৃত্ত সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।” এ দিন মঞ্চে বক্তৃতার সময়ে মানসবাবু কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “গণতন্ত্রে শেষ কথা বলে মানুষ। তাই মানুষের কাজ করতে এসে লজ্জা-মান-ভয় এই তিন রাখলে চলবে না।”
এ দিন বারবারই পুরনো কথায় ফিরেছেন মানসবাবু। কীভাবে তিনি রাজনীতিতে এসেছিলেন সেই স্মৃতি টেনে তিনি বলেন, “প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির হাত থেকে পতাকা নিয়ে ছাত্র রাজনীতি শুরু করেছিলাম।” এর পরে নিজের রাজনৈতিক জীবনের সাফল্যের কথা জানিয়ে তিনি কীভাবে সবংবাসীর মনজয়ের চেষ্টা করেছেন সে কথা উল্লেখ করেন। সবংবাসীর থেকে পাওয়া ভালবাসার কথা উল্লেখ করতেও ভোলেননি তিনি।
তাঁর জায়গায় যিনি সবংয়ের বিধায়ক হবেন তাঁকে গ্রহণ করার ডাক দিয়েছেন মানসবাবু। তিনি বলেন, “নেত্রীর নির্দেশে আমি রাজ্যসভার প্রার্থী হওয়ায় সোমবার বিধায়ক হিসাবে ইস্তাফা দেব। কিন্তু আগামী বিধানসভা উপ-নির্বাচনে সবংয়ে নেত্রী যাঁকেই প্রার্থী করুন, আমাদের তাঁকে বিপুল ভোটে জয়ী করতে হবে।”