মদের টাকা দিতে না-চাওয়ায় মার খেতে হত স্বামীর কাছে। অতিষ্ঠ বধূটি গায়ে আগুন ধরিয়ে দিলে বাঁচাতে গিয়েছিল সেই স্বামীই। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে। রবিবার মেদিনীপুর মেডিক্যালে মৃত্যু হল অগ্নিদগ্ধ বন্দনা রজকের (৩৪)। ঘটনায় জখম তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে চন্দ্রকোনা শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের নিশিন্তিপুর এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে মৃতার বাপের বাড়ির তরফে বধূ নির্যাতনের অভিযোগ করা হয়েছে। তার ভিত্তিতেই বন্দনাদেবীর স্বামী উমাশঙ্কর রজককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর দশেক আগে চন্দ্রকোনা রোডের ডাবচা গ্রামের উমাশঙ্করের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল বন্দনার। তাঁদের দু’টি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পরই পেশায় গাড়ি চালক উমাশঙ্কর নিজের ভিটে ছেড়ে শ্বশুরবাড়ির সামনে বাড়ি তৈরি করে পরিবার নিয়ে বাস করতে শুরু করেন। ইদানীং উমাশঙ্কর স্ত্রীর উপর শারীরিক অত্যচার করতেন বলে অভিযোগ। নেশা করতেন, সংসার খরচের টাকাও দিতেন না। পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালাতেন বন্দনাদেবী। উল্টে সেই টাকার ভাগ চাইতেন স্ত্রীর কাছে। তা নিয়ে অশান্তি লেগেই থাকত। মৃতার মা গীতা দাসের অভিযোগ, “জামাই তার রোজগারের সমস্ত টাকাই মদ খেয়ে নষ্ট করত। মেয়ে টাকা না দিলেই মারধর করত।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শনিবার সন্ধ্যা থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। রাতে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন দরিয়ে দেন বন্দনা দেবী। সে সময় স্ত্রীকে বাঁচাতেও গিয়েছিলেন উমাশঙ্কর। আগুনে পুড়েছে তাঁর হাতও। প্রতিবেশী ও বন্দনার বাপের বাড়ির লোকজন দু’জনকেই উদ্ধার করে চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই রাতেই বন্দনাদেবীকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। রবিবার সকালেই তাঁর মৃত্যু হয়। জখম উমাশঙ্কর এখনও চন্দ্রকোনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অভিযোগ পেয়েই পুলিশ হাসপাতালেই পুলিশি প্রহরার ব্যবস্থা করে।