গৌতম মাইতি। —নিজস্ব চিত্র।
ছোট থেকে স্বপ্ন ছিল ভাল স্কুল-কলেজে পড়ার। সেই সুযোগও এসেছিল। মেধার ভিত্তিতে রহড়া রামকৃষ্ণ মিশনের কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন মেধাবী ছাত্র গৌতম মাইতি। কিন্তু সংসারে অভাব। তাই এত ভাল কলেজে সুযোগ পেয়েও পড়তে পারবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে গৌতম।
এগরা ঝাঁটুলাল স্কুল থেকে এ বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৪৫৩ নম্বর নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন এগরার মেধাবী পড়ুয়া গৌতম। উচ্চ শিক্ষার জন্য রহড়া ও নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের দুটি কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। ইতিমধ্যেই রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ শতবর্ষ কলেজের ভর্তির জন্য মেধা তালিকায় নামও উঠেছিল গৌতমের। কিন্তু কলেজে ভর্তি হওয়ার টাকা ও কলেজের ছাত্রাবাসে থেকে কলেজে পড়াশোনা করার খরচ জোগাড় না করতে পারার জন্য ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন তিনি। তাঁর বাবা গণেশ মাইতি এগরা শহরের একটি বৈদ্যুতিন সামগ্রী বিক্রির দোকানে কাজ করে মাসে মাত্র তিন হাজার বেতন পান। গৌতমের কথায়, ‘‘পড়াশোনা চালানোর জন্য প্রত্যেক মাসে আট হাজার টাকা দরকার। বাবা যে টাকা রোজগার করেন, তাতে সংসার চালানোই যায় না। পড়া তো দূর অস্ত।’’
টাকার অভাবে নামী কলেজে গৌতমের উচ্চশিক্ষা যাতে বন্ধ না হয়ে পড়ে তার জন্য উদ্যোগী হয়েছেন দিঘা দেবেন্দ্রলাল জগবন্ধু হাইস্কুলের অঙ্কের শিক্ষক নন্দগোপাল পাত্র। সাহায্যও চেয়েছেন অনেকের কাছে। নন্দগোপালবাবুর কথায়, “টাকার অভাবে একটি মেধাবী ছাত্রের উচ্চশিক্ষা বন্ধ হয়ে যাবে এর চেয়ে লজ্জ্বার আর দুঃখজনক ঘটনা কিছু হতে পারে না। তাই নিজে কিছুটা উদ্যোগী হয়েছি।’’ গৌতমের স্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দনকুমার শিট বলেন, ‘‘ও বরাবরই ভাল ছাত্র। টাকার জন্য ওর পড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, সেটা ভাবতেও খারাপ লাগে।’’’ তিনি আরও জানান, স্কুলের পক্ষ থেকে এককালীন সাহায্যের চেষ্টা করা হচ্ছে। স্বপ্নপূরণের জন্য কেউ না কেউ আসবেনই, আশায় রয়েছেন গৌতমও।