প্রতীকী ছবি।
ব্যাঙের ছাতার মতো রাস্তার ধারে, জনবহুল বাজারে গজিয়ে উঠেছে একের পর এক হোটেল এবং খাবারের ছোট ছোট দোকান। অগ্নি সুরক্ষা বিধি শিকেয় তুলেই চলে রমরমিয়ে ব্যবস্যা। কিন্তু আগুন লাগলে যে কী পরিস্থিতি তৈরি হয়, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে বুধবার রাতের এগরা ভবানীচকের ঘটনা। মুহূর্তে পুড়ে ছাই হয়েছে ভবানীচক পেট্রোল পাম্পের কাছে থাকা একটি খাবারের হোটেল। যা প্রশ্ন তুলেছে ব্যবসায়ীদের সদিচ্ছা এবং প্রশাসনের ভূমিকায়।
পুরসভা বা পঞ্চায়েত এলাকায় এই ধরনের ব্যবস্থা চালুর আগে দমকলের ছাড় পত্র লাগে। বিশেষ করে বেকারি এবং চানাচুর প্রস্তুত কারখানায় আগুনের ব্যবহার বেশি থাকায় সেখানে অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা থাকা আবশ্যক। কিন্তু এগরা মহকুমা অধিকাংশ হোটেল, রেস্তরাঁ, বেকারিতে দমকলের অনুমতি নেই বলে অভিযোগ। কোনও হোটেল দমকলের অনুমতি নিয়ে থাকলেও তা আর পুনর্নবীকরণ করা হয় না বলে দাবি।
পটাশপুর অমর্ষি বাজারে গত বছর একটি চানাচুর তৈরি কারখানায় আগুন লাগে। আগুন লাগে পটাশপুরের আড়গোয়ালের বিস্কুটের গুদামে। গত বুধবার রাতে ভবানীচক পেট্রোল পাম্পের কাছে একটি হোটেল ভস্মীভূত হয়। প্রতিটি দুর্ঘটনাতেই দেখা গিয়েছে, দোকানগুলিতে দমকলের কোনও ছাড়পত্র ছিল না। প্রশাসন সূত্রের খবর, বছরে এগরা মহকুমায় গড়ে ২০-২২টি আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেগুলি রেস্তরাঁ বা হোটেল।
এগরা মহকুমায় বেকারি, হোটেল ও রেস্তরাঁর সংখ্যা দেড় শতাধিক। প্রশাসন সূত্রের খবর, এদের মধ্যে দমকলের বৈধ অনুমতি রয়েছে ৫২টির। বাকিগুলি বেআইনি ভাবে চলছে। দমকলের তরফ থেকে সতর্ক করা হলেও মালিকেরা কোনও আগ্রহ দেখাননি বলে অভিযোগ। এক বেকারি কারখানার মালিক বলছেন, ‘‘ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে আমরা ব্যবসা করছি। এখানে দমকলের কোনও অনুমতি লাগে কি না আমাদের জানা নেই। দরকার হলে অনুমতি নিয়ে নেব।’’
বুধবারের অগ্নিকাণ্ডের পরে এগরা দমকল বিভাগ নড়ে বসেছে। এলাকায় বেআইনি হোটেল, রেস্তরাঁ, বেকারি-সহ অন্য ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা তৈরি করছে তারা। দমকলের ছাড়পত্র না থাকলে নোটিস পাঠানো এবং প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।
এগরা মহকুমা দমকল বিভাগের আধিকারিক নিমাই বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দমকলের অনুমতি ছাড়াই পুরসভা ও পঞ্চায়েত থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে অনেকে ব্যবসা শুরু করছেন। আমরা বেআইনি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করছি।’’