—প্রতীকী চিত্র।
গ্রীষ্মকালে জেলার ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতে রক্তের টানাপড়েন দেখা যায়। কিন্তু ঘোর বর্ষায় এগরা সুপার স্পেসালিটি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত সংঙ্কট! হাসপাতালের দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনের কারণে রক্তদান শিবির কমে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এগরা সুপার স্পেসালিটি হাসপাতাল দীর্ঘ এক মাসের উপর রক্ত সঙ্কটে ভুগছে। চালু হওয়ায় পর এগরা মহকুমা- সহ পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পড়শি রাজ্য ওড়িশার বহু রোগী এখানে চিকিৎসার জন্য আসেন। আগে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ব্লাড ব্যাঙ্কের উপর নির্ভর করতো হতো এই হাসপাতালের রোগীদের। কিন্তু সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের নিজস্ব ব্লাড ব্যাঙ্ক চালু হওয়ায় কিছুটা সমস্যা মিটেছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, এগরার ব্লাড ব্যাঙ্কে প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ২৫ ইউনিট রক্ত থাকে। কিন্তু নির্বাচনের কারণে গত এক মাসে এলাকার মাত্র একটি রক্তদান শিবিরের ডাক পেয়েছিল এগরা ব্লাড ব্যাঙ্ক। সেই শিবিরে আশানুরূপ রক্ত সংগ্রহ হয়নি। ফলে জুন মাস থেকে রক্তের সঙ্কট তীব্র হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, বর্তমানে প্রতিদিন 'বি' পজিটিভ এবং 'ও' পজিটিভ— ছ’থেকে ন’ইউনিট রক্ত জমা থাকছে এগরা সুপার স্পেসালিটি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে। নেগেটিভ গ্রুপ এবং 'এবি' পজিটিভ গ্রুপের রক্তের কোনও যোগান নেই গত এক মাস ধরে। এ দিকে, প্রতিদিন গড়ে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ১০ থেকে ১৫ ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হচ্ছে। নেগেটিভ এবং 'এবি' পজিটিভ গ্রুপের রক্ত না পেয়ে দিশাহারা রোগীর পরিবার। কেউ আত্মীয় পরিজনদের নিয়ে এসে রোগীর রক্তের যোগান দিচ্ছেন। না হলে ভরা এলাকার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি।
পটাশপুর থেকে সরস্বতী জানা নামে এক বৃদ্ধা অসুস্থ অবস্থায় এগরা সুপার স্পেসালিটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। জরুরি ভিত্তিতে তাঁর 'এবি' পজিটিভ চার ইউনিট রক্তের দরকার ছিল। কিন্তু হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত না থাকায় রক্ত পাননি তিনি। শেষে এগরার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় সাহায্যে তিন ইউনিট রক্ত কোনও মতে সংগ্রহ করা হয়। সরস্বতী জানার পরিবার জানায়, দুদিন ধরে হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে ঘুরে এক ইউনিট এবি পজিটিভ রক্ত পাওয়া যায়নি। বাইরে থেকে রক্তদাতা ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ধরে চার ইউনিট রক্ত জোগাড় করেছে তারা। একই অবস্থা হয়েছিল এগরার মির্জাপুরের একজন মুমূর্ষু রোগীর।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, রোগীর পরিবারের থেকে রক্তদাতা আসলে তাঁদের রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। আগামী দিনে রক্তদান শিবির হলে রক্তের যোগান বাড়বে বলে দাবি। এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার সমীর আচার্য্য বলেন, ‘‘ভোটের জন্য এলাকায় গত একমাস শিবির না হওয়ায় রক্তের সঙ্কট চলছে। রোগীর পরিবারের রক্তদাতারা আসলে সঙ্গে সঙ্গে তাদের রক্ত নেওয়া হচ্ছে। আগামী দিনে রক্তদান শিবির হলে রক্তের সমস্যা কিছুটা মিটবে।’’