অচল: এই গ্যারেট ইঞ্জিনই চলার কথা ছিল। নিজস্ব চিত্র
পরিকল্পনার অভাব! মঙ্গলবার, গাঁধী জয়ন্তীর দিন হেরিটেজ ট্রেন সফর ভেস্তে যাওয়ার পর এই প্রশ্নই তুলছেন রেলশহরের বাসিন্দাদের একাংশ।
১৯২৬ সালে ইংল্যান্ডে তৈরি হয়েছিল বেয়ার-গ্যারেট ইঞ্জিন। বাষ্পচালিত এই রেল ই়ঞ্জিনের নামকরণ হয়েছিল নকশা প্রস্তুতকারক হার্বাট উইলিয়াম গ্যারেট ও চার্লস ফেব্রিক বেয়ারের নামে। ১৯৭৯সালের পরে আর এই ইঞ্জিন চলেনি। ২০০৬ সালে শেষবার একদিনের হেরিটেজ যাত্রায় শালিমার থেকে কোলাঘাট পর্যন্ত এই ইঞ্জিন চালানো হয়েছিল। অবশ্য তার পর থেকে খড়্গপুর রেল কারখানায় পড়ে ছিল ইঞ্জিনটি। ২০১৬ সাল থেকে নতুন করে এই ইঞ্জিন মেরামত করে চালু করার চেষ্টা চলেছে। সম্প্রতি রেল কর্তৃপক্ষ জানান, ফের চলবে গ্যারেট ইঞ্জিন। গাঁধী জয়ন্তীতে খড়্গপুর থেকে শালবনি পর্যন্ত এই হেরিটেজ ইঞ্জিনের সাহায্যে ট্রেন চালানো হবে।
গত ২২ সেপ্টেম্বর খড়্গপুর স্টেশন থেকে মেদিনীপুর পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়েছিল এই ইঞ্জিন। তারপর থেকে উৎসাহ বাড়ছিল হেরিটেজ ইঞ্জিনকে ঘিরে। কিন্তু এ দিন চলেনি ট্রেন। এমনকী, কবে থেকে তা চলবে তা জানাতেও পারেননি কর্তৃপক্ষ। কেন চলল না ট্রেন? রেল সূত্রের খবর, ট্রেনের টিকিট, গতি, কামরা-সহ নানা বিষয়ে জটিলতা দেখা যাওয়ায় ট্রেন চালানো সম্ভব হয়নি। মেরামত করা হলেও ওই ইঞ্জিন প্রতি ঘন্টায় ৩০ কিলোমিটার বেশি গতিতে চালানো সম্ভব নয়। কিন্তু মেন লাইনে চললে অন্তত প্রতি ঘণ্টায় ৭০কিলোমিটার গতি প্রয়োজন হয়। গতি সংক্রান্ত এই সমস্যা নজরে আসে পরীক্ষামূলক সফরের দিন। তা ছাড়া ইঞ্জিনের সঙ্গে কী ধরনের কামরা যুক্ত হবে, কত টাকা ভাড়া হবে সে বিষয়েও এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। খড়্গপুরের সিনিয়ার ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার কুলদীপ তিওয়ারি বলেন, “ট্রেনটি গাঁধী জন্মজয়ন্তী থেকে চালু হওয়ার কথা থাকলেও ভাড়া, ইঞ্জিনের গতি, কী ধরনের কামরা যুক্ত হবে তা নিয়ে জটিলতা রয়েছে এখনও। এগুলি হেড কোয়ার্টার থেকে এগুলি ঠিক হওয়ার পরে পরবর্তী দিনক্ষণ ঠিক হবে।” রেলের বক্তব্য জানার পরই প্রশ্ন তুলছেন রেলশহরের বাসিন্দারা। রেলযাত্রী সংগঠনের কর্মকর্তা শহরের বাসিন্দা জয় দত্ত বলেন,‘‘আশা করেছিলাম ট্রেনটি চলবে। কিন্তু বুঝতে পারিনি পরিকল্পনা না করেই রেল এই সফরের কথা ঘোষণা করে দিয়েছিল। খুব হতাশ হয়েছি।’’