ফাইল চিত্র।
ওলোটপালট। চেনা নয়। আসন্ন পুরভোটে অচেনা মাঠেই খেলতে হবে শাসক দলের হেভিওয়েটদের।
শুক্রবার ওয়ার্ড সংরক্ষণের খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। সেই তালিকা অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, পশ্চিম মেদিনীপুরের পাঁচ পুরপ্রধান তিন উপ পুরপ্রধান সংরক্ষণের গেরোয় পড়েছেন। চূড়ান্ত তালিকায় অদলবদল না হলে এই হেভিওয়েটদের অচেনা ওয়ার্ডে ভোটে লড়তে হতে পারে।
খড়্গপুর সদর বিধানসভা উপনির্বাচনে জিতেছে তৃণমূল। পুরভোটেও সেই জয় ধরে রাখতে মরিয়া তারা। নয়া বিধায়ক প্রদীপ সরকার বর্তমানে পুরপ্রধান। তাঁর ২০ নম্বর ওয়ার্ডটি মহিলা সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় ওই ওয়ার্ডে প্রদীপের স্ত্রী পাপিয়া সরকার প্রার্থী হবেন বলে জল্পনা চলছে। যদিও এই বিষয়ে প্রদীপ নিজে বলছেন, “নিয়ম অনুযায়ী ওয়ার্ড সংরক্ষণ হয়েছে। এর পরে কে প্রার্থী হবে দল ঠিক করবে। প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছে তো সবার থাকে। আমার স্ত্রী গত উপ-নির্বাচনে দলের হয়ে কাজ করেছিলেন। তাই ওঁর বিষয়েও দল ভাববে।” একইভাবে উপ-পুরপ্রধান শেখ হানিফের ওয়ার্ডে তাঁর স্ত্রী প্রাক্তন কাউন্সিলর মুমতাজ কুদ্দুসির প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে। সংরক্ষণের গেরোয় পড়েছেন তৃণমূলের শহর কোর কমিটির আর তিন মাথা।তাঁদের মধ্যে দেবাশিস চৌধুরী এবং রবিশঙ্কর পাণ্ডেরাও দলের উপর সিদ্ধান্ত ছেড়েছেন। তবে তৃণমূল সূত্রের খবর, সংরক্ষণের খসড়া তালিকা অনুযায়ী শহরের পাঁচ নেতা আরও বেশি দলের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়লেন। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটাতে যা দলের পক্ষে উপযোগী হতে পারে। কারণ, বিরোধীদের দখলে রয়েছে এমন ওয়ার্ডগুলিতে প্রার্থী করা হতে পারে ওই পাঁচ নেতাকে।
ক্ষীরপাই, খড়ার, রামজীবনপুর পুরসভার পুরপ্রধান এবং উপ-পুরপ্রধান ও ঘাটাল পুরসভার পুরপ্রধান সংরক্ষণের গেরোয় পড়েছেন। লোকসভা ভোটের নিরিখে বিচার করলে পাঁচটি পুরসভাতেই প্রভাব বেড়েছে গেরুয়ার। তাই স্বাভাবিক ভাবে চেনা ওয়ার্ড না পেলে শাসক দলের হেভিওয়েটদের লড়াই কিছুটা কঠিন হবে। বিশেষ করে রামজীবনপুরের ক্ষেত্রে সমস্যা বেশি। কারণ, এখানে পুরবোর্ড দখলে সমানে সমানে টক্কর দিচ্ছে বিজেপি। যদিও শাসক দলের নেতারা বলছেন, লোকসভার সঙ্গে পুরসভা ভোটের ফারাক বিস্তর। স্থানীয় উন্নয়ন এখানে প্রাধান্য পায়। তা ছাড়া লোকসভার পর কয়েকটি এলাকায় বিজেপির বাড়বাড়ন্ত দেখা গেলও সে প্রভাব এখন আর নেই।
জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “নিয়ম মেনে খসড়া তালিকা প্রকাশ হয়েছে।যাঁরা সংরক্ষণের কোপে পড়েছেন,তাঁদের কথা দল ভাবনা চিন্তা করবে।” সংরক্ষণ তালিকা প্রসঙ্গে ঘাটালের এক সিপিএম নেতা মানলেন, “তালিকা নিয়ে অভিযোগ করার কিছু নেই।” বিজেপি ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “যে কোনও পরিস্থিতির সঙ্গে লড়তে দল প্রস্তুত। তালিকা নিয়ে মাথাব্যথা নেই।”