প্রচার: গান গাইছেন লক্ষ্মীকান্ত মাহাতো। নিজস্ব চিত্র
ম্যালেরিয়া ও অন্য মশাবাহিত রোগ ঠেকাতে সচেতনতা প্রচারে লোক শিল্পীদের কাজে লাগাতে চাইছে স্বাস্থ্য দফতর। সে জন্য তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের সাহায্যও চাওয়া হয়েছে। কিন্তু কাজে লাগানো হয়েছে হাতে গোনা কয়েকজন লোকশিল্পীকে। ফলে কর্মসূচির সাফল্য নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
উদ্বেগজনক হারে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে ঝাড়গ্রাম জেলা জুড়ে। সেই প্রেক্ষিতে লোকসঙ্গীতের সুরে প্রচার শুরুও হয়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলায় রাজ্য সরকারের লোকপ্রসার প্রকল্পের আওতায় রয়েছেন ৪,৬৩০ জন শিল্পী। কিন্তু ২৫-২৮ জুলাই চারদিনে পর্যায়ক্রমে প্রচারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মাত্র ২৪ জন ঝুমুর ও বাউল শিল্পীকে। ঝাড়গ্রাম জেলার আটটি ব্লকের ৭২টি মৌজায় ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে। গত তিন মাসে জেলায় আট জনের মৃত্যু হয়েছে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে। তাঁদের মধ্যে চারজন জামবনি ব্লকের বাসিন্দা। সার্বিক ভাবে জামবনিতে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যাও অনেক বেশি। অথচ প্রচার কর্মসূচিতে জামবনির শিল্পীরা কেউ নেই।
মাত্র একটি ট্যাবলো আর হাতে গোনা শিল্পীদের দিয়ে সচেতনতা প্রচারের কাজ কতটা ফলপ্রসূ হবে তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলার ভারপ্রাপ্ত তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক বরুণ মণ্ডল বলেন, “বেশি এলাকায় প্রচার করতে হলে ট্যাবলোর সংখ্যা বাড়াতে হবে। আরও বেশি লোকশিল্পীকে নিযুক্ত করতে হবে। এ জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন দরকার। স্বাস্থ্য দফতরের প্রয়োজন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।” বিরোধীরাও কটাক্ষ করছেন, সরকারের সাফল্য প্রচারে লোকশিল্পীদের দিয়ে ভুরি ভুরি অনুষ্ঠান করানো হয়। অথচ, জনসচেতনতার কাজে সেই উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।
প্রশাসনের অন্দরের খবর, লোকপ্রসার প্রকল্পভুক্ত শিল্পীদের প্রতি মাস একহাজার টাকা করে বহাল ভাতা দেওয়া হয়। তার বাইরে অনুষ্ঠান পিছু এক হাজার টাকা করে আলাদা সাম্মানিক দিতে হয়। সে ক্ষেত্রে ম্যালেরিয়া সচেতনতায় শিল্পীর সংখ্যা বাড়লে সাম্মানিকের পরিমাণও বাড়বে। আটটি ব্লকের ৭২টি গ্রামে ট্যাবলো সমেত শিল্পীদের নিয়ে অনুষ্ঠান করাতে গেলে খরচও বাড়বে।
জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনী মাঝি অবশ্য বলেন, “লোকশিল্পীদের দিয়ে গ্রামে গ্রামে প্রচারের জন্য তথ্য-সংস্কৃতি দফতরকে বলেছি। কাজ শুরু হয়েছে। আক্রান্ত এলাকাগুলির বিস্তারিত তালিকা তথ্য-সংস্কৃতি দফতরকে দেওয়া হবে। সেই মতো প্রচার করা প্রয়োজন।”