গত শুক্রবার স্কুলে প্রার্থনা চলাকালীন মাইকে ঘোষণা করা হয়েছিল, ১০ তারিখ পেরিয়ে গিয়েছে। ১৪ তারিখ অবশ্যই বুট জুতো পরে আসতে হবে। এমনকি, এর জন্য একাধিক পড়ুয়াকে শাস্তি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। পোশাকের সঙ্গে বুট জুতোর ‘বিধি’ চালু করা নিয়ে এই অভিযোগ উঠেছে স্কুলের বিরুদ্ধে।
কোনও বেসরকারি স্কুলা নয়, মহিষাদলের কেশবপুর জলপাই গদাধর যোগেন্দ্র মিলন বিদ্যাপীঠে এমন ঘটনায় ক্ষিপ্ত অভিভাবক ও স্থানীয়রা। বাঁশখানা জলপাই গ্রামের বাসিন্দা তথা এক মহিলা অভিভাবক বলেন, ‘‘শুক্রবার ছেলে স্কুল থেকে ফিরে জানাল, জুতো না পরে গেলে স্কুল থেকে তাকে বের করে দেওয়া হবে। বাধ্য হয়ে তড়িঘড়ির রবিবার নতুন জুতো কিনলাম।’’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নবম শ্রেণির এক পড়ুয়ার কথায়, ‘‘শুক্রবার চটি পরে স্কুলে গিয়েছিলাম। প্রার্থনার সময় আমাকে বের করে দেওয়া হয়।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্রের বাবার দাবি, ‘‘সবে স্কুল খুলেছে। বই-খাতা কেনায় টাকা খরচ হয়েছে। এখনই আবার জুতো কেনার জন্য টাকা জোগাড় করা মুুশকিল।’’
পেশায় গাড়ি চালক চন্দন ঘোড়াই নামে এক অভিভাবকের অভিযোগ, ‘‘কয়েকটা দিন সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু জুতো কেনার জন্য স্কুলে এত তাড়া দিচ্ছে, বাধ্য হয়ে ছেলে শুক্রবার স্কুলে যায়নি।’’
অভিভাবকদের ক্ষোভের জেরে শেষ পর্যন্ত সুর নরম করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রধান শিক্ষক অলোকানন্দ অধিকারী বলেন, ‘‘প্রজাতন্ত্র দিবস ও নেতাজি জয়ন্তীর মতো দিনগুলি মর্যাদা র সঙ্গে আমরা পালন করি। তাই শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করেই স্কুলে বুটজুতো পরার জন্য নিয়ম চালু করা হয়েছে। তবে এর জন্য কাউকে চাপ দেওয়া হয়নি।’’ তিনি জানান, ৯০ শতাংশ পড়ুয়া সোমবার জুতো পরে স্কুলে এসেছিল। যারা পরেনি, তাদের কোনও অসুবিধা থাকলে স্কুলে এসে জানাতে বলা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘শিক্ষাবর্ষের শুরুতে অভিভাবকদের কাছে বুট জুতো কেনার আবেদন জানিয়েছিলাম। তবে, কাউকে কোনওভাবেই শাস্তি বা মারধর করা হয়নি।’’
হলদিয়ার মহকুমা শাসক কুহক ভূষণ জানিয়েছেন, ‘‘কী হয়েছে, আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’