রং ইংলিশ।
নো রুট মার্চ।
টিএমসি।
নির্বাচন বিধিভঙ্গের এমনই সব বিচিত্র অভিযোগ আসছে এসএমস বার্তায়। এ সব অভিযোগ পাওয়ার পর এমসিসি (মডেল কোড অব কনডাক্ট) সেলের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক ও কর্মীদের নাজেহাল অবস্থা। এর মানে কী? কী বা আছে সমাধান। মাথা চুলকে একটা সমাধান মিলল। যাঁরা মোবাইল থেকে অভিযোগ পাঠিয়েছেন, তাঁদের তো নম্বর পাওয়া যাবে। ফোন করে অভিযোগটা ঠিক কী জেনে নেওয়া যাক। তারপর সেটা রিটার্নিং অফিসারকে জানিয়ে দেওয়া যাবে। নাহলে তাঁকে ফের অভিযোগ করতে বলতে হবে। কিন্তু সে তো পাওয়া যাবে মোবাইলের ক্ষেত্রে। কিন্তু কেউ যদি সাইবার কাফে থেকে তা পাঠান? সে ক্ষেত্রে আর কিছুই করার নেই।
এখানেই শেষ নয়। পারিবারিক অশান্তির অভিযোগও এসে হাজির। কী রকম অশান্তি? তাও কী ছাই বোঝা যাচ্ছে। ‘amar bari thaka’-এ ভাবেই ইংরেজি অক্ষরে বাংলা লেখা। পড়া তো গেল। কিন্তু বুঝতে গিয়ে হিমশিম। অগত্যা থানায় পাঠিয়ে দিল
এমসিসি সেল।
সারাদিনে এমন ভুরি ভুরি অভিযোগ আসছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। এমনকী একই অভিযোগ ১৩ বার পর্যন্ত আসার নজির রয়েছে ঘন্টাখানেকের মধ্যে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভিযোগ নথিবদ্ধ করতে হচ্ছে। এক আধিকারিকের কথায়, “অভিযোগের সারবত্তা রয়েছে এটা ঠিক। কিন্তু একই অভিযোগ ১৩ বার! পড়ে তো দেখতে হচ্ছে।’’ এ ভাবেই প্রায় এগারোশো অভিযোগ জমা পড়ে গিয়েছে জেলায়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অভিযোগের নিষ্পত্তি হচ্ছে বলেও এমসিসি সেলের দাবি।
কিন্তু এই ধরনের অভিযোগ আসার পিছনে কী কারণ থাকতে পারে? খতিয়ে দেখতে গিয়ে বোঝা গেল, এর প্রধান কারণ, অ্যান্ড্রয়েড ফোনের কি-প্যাড। একটি শব্দ লেখার পরে কোনও কারণে ‘সেন্ড বাটনে’ হাত পড়ে গেলেই হল। দুর্বোধ্য বার্তাই চলে যাবে। অথবা ভুল বোতামের কারসাজি। যেমন, অনেক সময়ই ‘রুট মার্চ’ হয়ে যাচ্ছে ‘রুড মার্চ। অনেক ক্ষেত্রে অসম্পূর্ণ অভিযোগও আসছে। যেমন, শুধু লেখা ‘নো রুট মার্চ’। সেখানে না আছে বিধানসভা কেন্দ্রের নাম, না রয়েছে এলাকার উল্লেখ।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এগারোশোর মতো অভিযোগের মধ্যে এ রকম অভিযোগের সংখ্যা দু’শোরও বেশি। একই অভিযোগ একাধিকবার আসার কারন কী? প্রশাসনিক আধিকারিকদের অনুমান, অভিযোগটি নথিভুক্ত হয়েছে কিনা সেই বার্তা পৌঁছতে কিছুটা দেরি হতে পারে। তাই অভিযোগকারীর মনে হচ্ছে, অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়নি। তাই তিনি বারবার একই অভিযোগ পাঠিয়ে চলেছেন।
তবে বাকি ক্ষেত্রে অবশ্য কোথায় রুট মার্চ হচ্ছে না, কোথায় দলীয় পতাকা খুলে ফেলে দেওয়া হচ্ছে, পার্টি অফিসে হামলা প্রভৃতি নানা ধরনের নির্বাচন সংক্রান্ত অভিযোগই আসছে।
কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে পারিবারিক সমস্যা থেকে শুরু করে একটি শব্দ বা দু’-তিন শব্দে হাজির একটি অভিযোগ। যা বোঝার সাধ্য নেই কারও। আবার ইংরেজি অক্ষরে বাংলা লেখার অভিযোগ বুঝতে গিয়েও চরম সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অভিযোগের সমাধান তো পরের বিষয়, অভিযোগের বিষয় বুঝতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে এমসিসি সেলের আধিকারিক ও কর্মীদের।