দুশ্চিন্তায় গৌতমের পরিবার নিজস্ব চিত্র
ছোটবেলা থেকে ঈশ্বর বিশ্বাসী। কোথাও পুজো দিতে গেলে গেরুয়া বসনই পছন্দ ছিল। গত রবিবার কালীঘাটে পুজো দেওয়ার নাম করে গেরুয়া পরেই সন্ন্যাসীর বেশ ধরে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন পটাশপুর-১ ব্লকের চিস্তিপুরের গ্রামের বছর চৌত্রিশের যুবক গৌতম গুছাইত। শুক্রবার তাঁকেই আলিপুর চিড়িয়াখানায় সিংহের মুখ থেকে উদ্ধার করেন নিরাপত্তা রক্ষীরা। সিংহের থাবায় জখম গৌতম কলকাতায় হাসপাতালে চিকিৎধীন। আর পুজো দিতে কলকাতায় যাওয়া ছেলের এমন কাণ্ড শুনে উদ্বিগ্ন গোটা পরিবার। হতবাক গ্রামের মানুষ। আহত স্বামীকে দেখতে কলকাতায় ছুটেছেন স্ত্রী ফুলরানি।
আগে কলকাতায়, শ্রীরামপুর, আরামবাগে বাটিক প্রিন্ট কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন। কয়েক বছর আগে চিস্তিপুরে বাড়ির কাছেই একটি বাটিক প্রিন্ট কারখানায় কাজ করতে শুরু করেন গৌতম। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বিয়ের পর তাঁর মানসিক সমস্যা তৈরি হয়। চিকিৎসার পরে এখন গৌতম সুস্থই বলে দাবি পরিবারের। কিন্তু সে কেন এমন কাণ্ড করল তা ভেবে পাচ্ছেন না তাঁরা।
মাসে কখনও একবার, কখনও দু’বার কলকাতা এসে কালিঘাট, দক্ষিণেশ্বর সহ একাধিক মন্দিরে পুজো দিতে আসতেন গৌতম। দুই ভাইয়ের মধ্যে গৌতম ছোট। বাড়িতে আট বছরের ছেলে, স্ত্রী ও বাবা-মা রয়েছে। মানসিক অসুস্থতার কারণে মাঝেমধ্যেই বাড়িতে সে ঝামেলা করতো বলে প্রতিবেশীরা জানান। কয়েকদিন আগে আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন মা গৌরীবালা। সেই সুযোগে রবিবার সকাল আটটা নাগাদ কালীঘাটে পুজো দেবে বলে স্ত্রীকে জানিয়ে বাড়ি থেকে বেরোন গৌতম। সঙ্গে ঝোলায় ছিল পোশাক ও মোবাইল ফোন। এ দিন আলিপুর চিড়িয়াখানায় সিংহের খাঁচার ভিতরে কোনওভাবে ঢুকে পড়েন গৌতম। হিংস্র সিংহের থাবায় গুরুতর জখম হন। নিরাপত্তা রক্ষীরা তাঁকে উদ্ধার করেন।
প্রতিবেশীরা টিভিতে ঘটনা জানতে পেরে গৌতমের বাড়িতে জানায়। পরে ওয়াটগঞ্জ থানা থেকে পরিবারকে ফোন করে বিষয়টি জানানো হয়। মা গৌরিবালা বলেন, ‘‘ছেলের আগে মাথার সমস্যা ছিল। চিকিৎসার পরে এখন সুস্থ। মন্দিরে পুজো দেওয়ার নাম করে আগেও বেরিয়েছে। আবার ফিরে এসেছে। কিন্তু এ বার কেন এমন কাণ্ড করল ঈশ্বরই জানেন! তিনিই রক্ষা করেছেন।’’