ঘাটালের কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড থেকে পুরসভার মোড় পর্যন্ত রাস্তা ঢালাইয়ের কাজ চলছে। এই রাস্তা নিয়েই উঠেছে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।
গত পুর বোর্ডের আমলে বাঁধ সংস্কারের কাজ শেষের আগেই ঠিকাদারকে কোটি টাকা মিটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল ঘাটাল পুরসভার বিরুদ্ধে। নতুন পুরবোর্ডও ফের জড়াল। এ বার টেন্ডার না করেই রাস্তার কাজ শুরুর অভিযোগ উঠেছে ঘাটাল পুরসভার বিরুদ্ধে।
দিন কয়েক আগেই ঘাটাল শহরে কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড থেকে পুরসভার মোড় পর্যন্ত রাস্তাটি সংস্কারের কাজ শুরু করেছে পুরসভা। অভিযোগ, টেন্ডার প্রক্রিয়া ছাড়াই ওই কাজ শুরু হয়েছে। সমাজ মাধ্যমে প্রচারিত একটি ভিডিয়োয় (আনন্দবাজার সত্যতা যাচাই করেনি) পুরপ্রধান তুহিন বেরাকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘ওই রাস্তাটির জন্য প্রশাসনিক অনুমতি মিলেছে। তবে টাকা বরাদ্দ হয়নি। রাস্তাটির প্রয়োজন ছিল। তাই এজেন্সিকে বুঝিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে।’’
এই ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই শোরগোল পড়েছে। সরব হয়েছে বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য অশোক সাঁতরার প্রশ্ন, “দু’দিন আগে হলদিয়ায় তৃণমূলের সবর্ভারতীয় নেতা ঠিকাদারি নিয়ে সরব হয়েছেন। দলের নেতাদের সতর্কও করেছেন। এরপরেও এখানে টেন্ডার ছাড়া ঠিকাদার কাজ পেল কী করে?”
পুরসভা সূত্রে খবর, বিতর্ক বাধতেই এখন তড়িঘড়ি টেন্ডারের কাগজপত্র তৈরির কাজ চলছে। তবে ভিডিয়োয় বলা কথা মানছেন না পুরপ্রধান। সোমবার ঘাটাল পুরসভার পুরপ্রধান তুহিন বেরা বলেন, “রাস্তার কাজে কোথাও কোনও অনিয়ম হয়নি। টেন্ডার-সহ যাবতীয় প্রক্রিয়া মেনেই কাজ হচ্ছে।” কত টাকা বরাদ্দ হয়েছে? এ বার পুরপ্রধানের জবাব, “আপনি তো সংবাদপত্রে লিখবেন। সঠিক পরিমাণটা দেখে বলতে হবে। পুরসভায় গেলে বলতে পারব।” প্রাক্তন পুরপ্রধান বিভাস ঘোষ যদিও দাবি করলেন, “ভোটের আগেই তো ওই রাস্তার জন্য টেন্ডার হয়ে গিয়েছিল। এতদিনে সেটার কাজ হচ্ছে।” কত টাকা বরাদ্দ হয়েছিল? বিভাসের জবাব, “ঠিক মনে নেই। সম্ভবত ৪০ লাখ হবে।’’ পরক্ষণেই তাঁর দাবি, “৪০ নয়, ১৬ লক্ষ টাকা।”
ঘাটাল কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড থেকে পুরসভার মোড় পর্যন্ত রাস্তাটি শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। গত বছর বন্যার জলে রাস্তাটি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। পাঁচবার জলের তলায় চলে গিয়েছিল ওই রাস্তা। তবে বিরোধীশূন্য পুরবোর্ড সেই রাস্তার কাজে হাত দিতেই বিতর্ক বাধায় শহরবাসী ক্ষুব্ধ। শহরবাসীর একাংশের বক্তব্য, রাস্তার কাজ জরুরি ছিল ঠিকই। তা বলে কাজ নিয়ে এত বিতর্ক হবে কেন? অনিয়ম যদি নাই থাকে কাজের ‘দরপত্র’ প্রকাশ্যে আনছে না কেন পুরসভা? কত টাকার কাজ, তাও কেন স্পষ্ট নয়?
জবাব চাইছে জনতা।