মেদিনীপুরে কংসাবতী নদীর এই ঘাটেই হবে সৌন্দর্যায়নের কাজ। — সৌমেশ্বর মণ্ডল।
গাঁধী ঘাটের সৌন্দর্যায়নে উদ্যোগী হল মেদিনীপুর পুরসভা। এ জন্য প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সেই টাকায় ঘাট বাঁধানো হবে, তৈরি হবে পার্ক, ব্যবস্থা করা হবে পর্যাপ্ত আলোর। পুরপ্রধান প্রণব বসু বলেন, ‘‘ঘাটের সামনে জায়গা রয়েছে। মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর মূর্তি আছে। তাকে ঘিরেই সৌন্দর্যায়ন হবে।’’
মেদিনীপুর শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে কাঁসাই নদী। শহরের এক প্রান্তে কাঁসাইয়ের এই ঘাট শহবাসীর বেশ প্রিয়। সামনে বেশ কিছুটা খোলা জায়গা রয়েছে। এলাকাবাসী এই ঘাটে স্নান করেন, জামাকাপড় কাচেন। আবার এই ঘাটেই প্রতিমা বিসর্জন হয়। ঐতিহাসিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ এই ঘাট। ১৯৪৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি এখানেই মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর চিতাভস্মও ভাসিয়েছিলেন স্বদেশি- বিপ্লবীরা। সেই থেকেই অর নাম গাঁধী ঘাট। আগে অবশ্য এই ঘাট ঘিরে শহরবাসীর বিশেষ উৎসাহ ছিল না। রাস্তাও ছিল খানাখন্দে ভরা। সংস্কার হত কালেভদ্রে।
শেষে ২০১১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি এখানে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর মূর্তি বসানো হয়, সংস্কার করা হয় রাস্তা। গাছের চারদিক সিমেন্ট দিয়ে বাঁধিয়ে বসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। তবে সন্ধের পরে সেখানে নানা অসামাজিক কাজকর্ম চলে বলে অভিযোগ। গরু চরে বেড়ায়। চারদিকে পড়ে থাকে গাছের পাতা, আবর্জনা। তাছাড়া এলাকাটি শহরের একপ্রান্তে। তাই এলাকার পরিবেশ ফিরিয়ে বয়স্কদের বেড়ানো, কচিকাঁচাদের খেলাধুলোর উপযোগী করে তোলার দাবি ছিলই।
পরিস্থিতি দেখে পুরসভাও এবার ঘাট ও সংলগ্ন এলাকা সংস্কারে উদ্যোগী হয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ঘাট বাঁধানো হবে। এতে নদীতে নেমে স্নানের সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কাও কমবে। পার্ক হলে বেড়ানো, খেলার সুযোগ মিলবে। বন্ধ হবে অসামাজিক কাজকর্মও। পাশাপাশি এলআইসি চকের সৌন্দর্যায়নেরও পরিকল্পনা করেছে পুরসভা। আগেই বিদ্যাসাগরের মূর্তির পাদদেশে পার্ক ও ফোয়ারা তৈরি করা হয়েছিল। এ বার মূর্তির দু’পাশের ত্রিকোণ অংশ গ্রিল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। এতদিন এখানে জামা-কাপড়, জুতো বা সব্জির পসরা নিয়ে বসতেন ব্যবসায়ীরা। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের সভামঞ্চ হত। এখন সিদ্ধান্ত হয়েছে, ফোয়ারা ও বাগান করে এলাকাটি সাজানো হবে। শহরের কেন্দ্রস্থলের সৌন্দর্যায়নেই এই উদ্যোগ।