বাম দুর্গে ফাটল ধরাতে চষে বেড়াচ্ছেন দুর্গাশঙ্কর

বনেদি জমিদার বাড়ির ছেলে। পারিবারিক সংযোগ ছিল কংগ্রেসী রাজনীতির সঙ্গেই। তবু তিনি দীর্ঘদিন পুরপ্রধান ছিলেন বামফ্রন্টের হয়ে। ক্ষীরপাই পুরসভার বিদায়ী প্রধান দুর্গাশঙ্কর পান গত পঁচিশ বছর ভোটে জিতেছেন বাম প্রার্থী হিসাবে। কিন্তু এ বার তিনি তৃণমূলের প্রার্থী। ‘পরিবর্তন’টা তাঁর নিজের কাছেও একটু অন্যরকম।

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

ঘাটাল শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৫৩
Share:

দুর্গাশঙ্কর পান। — নিজস্ব চিত্র।

বনেদি জমিদার বাড়ির ছেলে। পারিবারিক সংযোগ ছিল কংগ্রেসী রাজনীতির সঙ্গেই। তবু তিনি দীর্ঘদিন পুরপ্রধান ছিলেন বামফ্রন্টের হয়ে। ক্ষীরপাই পুরসভার বিদায়ী প্রধান দুর্গাশঙ্কর পান গত পঁচিশ বছর ভোটে জিতেছেন বাম প্রার্থী হিসাবে। কিন্তু এ বার তিনি তৃণমূলের প্রার্থী। ‘পরিবর্তন’টা তাঁর নিজের কাছেও একটু অন্যরকম। দুর্গাশঙ্করবাবুর অকপটে স্বীকারোক্তি, ‘‘এ বারেও জিতব, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে আমার এতদিনের রাজনৈতিক জীবনে ভোটের আগে ওয়ার্ডে এত সময় কোনও দিনই দিতে হয়নি।”

Advertisement

একদিকে মহিলা সংরক্ষিত হওয়ায় এ বার নিজের ওয়ার্ড থেকে লড়তে পারছেন না দুর্গাশঙ্করবাবু। তাঁকে দাঁড়াতে হয়েছে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। মূলত বাম দুর্গ বলে পরিচিত এই ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী মৈনাক চক্রবর্তী এক সময়ে তাঁর কাছের লোক ছিলেন। ফলে লড়াইয়ে অনেকটাই বেগ পেতে হচ্ছে। তারউপর রয়েছে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। দুর্গাশঙ্করবাবু নিজেই জানিয়েছেন এই কোন্দল সামলাতে তাঁকে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। সব দিক সামলে নিয়ে চলছে ভোটের প্রচার। দুর্গাশঙ্কর পান বলেন, “আমরা নিজের ওয়ার্ডের সঙ্গে পুরো ১০টি ওয়ার্ডে সময় দিতে হচ্ছে। দল দায়িত্ব দিয়েছে। তাই সব সহকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে যাতে পুরসভাটি তৃণমূলের দখলে আসে তার চেষ্টাও করছি।”

দীর্ঘ পঁচিশ বছর ধরে টানা চেয়ারম্যান। সত্তরের দশকে কলেজে পড়ার সময় থেকেই রাজনীতিতে ঢুকে পড়েন তিনি। দুর্গাশঙ্করবাবুর ঠাকুরদা জ্যোতিন্দ্রনাথ পানের কয়েক হাজার বিঘা জমি ছিল বলে জানা যায়, সঙ্গে কয়লা, চালের বড় ব্যবসাও ছিল। জ্যোতিন্দ্রনাথ বাবুর একমাত্র ছেলে বিশ্বনাথ পান সমাজসেবা করতেন। কলেজ জীবনে দুর্গাশঙ্করবাবুও ছাত্র পরিষদ করতেন। ১৯৮০ সালে ক্ষীরপাই পুরসভায় নির্দল হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে উপ-পুরপ্রধান হন। পরে ১৯৮৫ সালে তিনি যোগ দেন বাম রাজনীতিতে। ১৯৯০ সালে বাম প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন। সেই থেকে এখন পর্যন্ত টানা পুরপ্রধান পদেই বহাল আছেন।

Advertisement

২০১০ সালেও দুর্গাশঙ্করবাবু বামফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সিপিএমের দুর্দিনেও ক্ষীরপাই পুরসভায় ক্ষমতা ধরে রাখতে সক্ষম হন। প্রায় বছর খানেক আগে ব্যাক্তিগত কারণ দেখিয়ে যোগ দেন তৃণমূলে। কিন্তু তৃণমূলে যোগ দিয়ে এবার ভোটের লড়াইয়ে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে তাঁকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement