জামবনির রাঙামাটিয়া মাঠে হাতিটিকে আচ্ছন্ন করে লরিতে তোলার সময়। নিজস্ব চিত্র
ভবঘুরে হাতির ঠাঁই হল ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্কে। মঙ্গলবার গিধনি রেঞ্জের আমতলিয়া বিটের রাঙামাটিয়া ফুটবল মাঠে ঘুমপাড়ানি গুলিতে হাতিটিকে আচ্ছন্ন করেন রাজ্য বন্যপ্রাণ শাখার বিশেষজ্ঞ সুব্রত পাল চৌধুরী। পরে হাতিটিকে দড়ি দিয়ে বেঁধে পে-লোডার দিয়ে টেনে লরিতে তোলা হয়। সন্ধ্যায় তাকে ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানায় নিয়ে আসা হয়। হাতিটিকে চিড়িয়াখানায় নবনির্মিত পিলখানায় রাখা হয়েছে। তার দেখভালের জন্য জলদাপাড়া থেকে দু’জন মাহুত এসেছেন। ডিএফও (ঝাড়গ্রাম) বাসবরাজ হলেইচ্চি বলেন, ‘‘হাতিটিকে চিকিৎসার জন্য চিড়িয়াখানায় নিয়ে আসা হয়েছে। আপাতত পাঁচদিন হাতিটিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। তারপরে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
দিন পনেরো ধরে ওই পূর্ণবয়স্ক পুরুষ দাঁতালটি ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের জামবনি ও গিধনি রেঞ্জ এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল। উঠোনে মজুত ধান, খেতের আনাজ খাচ্ছিল। শান্ত স্বভাবের হাতিটিকে উত্যক্তও করছিলেন এলাকাবাসী। রাতে ঝাড়গ্রাম শহরের খুব কাছে চলে এসেছিল হাতিটি। বনকর্মীরা ও হুলাপার্টি হাতিটিকে বার কয়েক ঝাড়খণ্ডের দিকে পাঠালেও সে ফের ঝাড়গ্রামে চলে আসে। হাতিটির শুঁড়ে ক্ষত থাকায় কোনও ঝুঁকি নেয়নি বন দফতর। সিদ্ধান্ত হয়, চিকিৎসার জন্য হাতিটিকে ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানায় নিয়ে যাওয়া হবে।
এই ক’দিন আমতলিয়া বিট অফিসের কাছেই থাকত হাতিটি। হাতিটির নজরদারি করতেন ৩০ জন হুলাপার্টির সদস্য। প্রতিদিন কয়েক কুইন্ট্যাল ধান, আনাজ ও কলাগাছ খেতে দেওয়া হতো হাতিটিকে। স্থানীয় বাসিন্দারাও হাতিটিকে খাবার দিচ্ছিলেন। এ দিন আমতলিয়া বিট অফিস এলাকা থেকে হুলাপার্টি দিয়ে খেদিয়ে হাতিটিকে রাঙামাটিয়া ফুটবল মাঠে নিয়ে আসা হয়। তারপর ঘুম পাড়ানি গুলিতে তাকে আচ্ছন্ন করা হয়। সেখানেই হাতিটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন দুই প্রাণিচিকিৎসক চঞ্চল দত্ত ও সুলতা মণ্ডল। উপস্থিত ছিলেন এডিএফও (ঝাড়গ্রাম) আশিস মণ্ডল, গিধনির রেঞ্জ অফিসার বাসিরুল আলম। পরে লরিতে তুলে হাতিটিকে চিড়িয়াখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে তাকে ধান, আনাজ ও কলাগাছ খেতে দেওয়া হয়।