R G Kar Hospital Incident

গোলের পরই নয়া জার্সি, ‘জাস্টিস ফর আর জি কর’

শনিবার মেদিনীপুরে অরবিন্দ স্টেডিয়ামে এই ছবি দেখা গিয়েছে। দ্বিতীয় বিভাগীয় ফুটবল টুর্নামেন্ট চলছে এখন। মেদিনীপুর সদর মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৯
Share:

মেদিনীপুরে ময়দানে অভিনব প্রতিবাদ। নিজস্ব চিত্র।

আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ। বিচার চেয়ে, পথে নেমে সুর চড়িয়েছে নাগরিক সমাজ। কলকাতায় খেলার মাঠেও ন্যায়বিচারের দাবি উঠেছে। মাঠের ‘শত্রুতা’ ভুলে ন্যায়বিচারের দাবিতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাজপথে নেমেছেন মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহমেডানের সমর্থকেরা। মেদিনীপুরেও তাই-ই। ক্রীড়াপ্রেমীদের মিছিল হয়েছে। এ বার মেদিনীপুরের ফুটবল মাঠেও দেখা গেল আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ। দেখা গেল, ফুটবলারের জার্সিতে লেখা রয়েছে, ‘জাস্টিস ফর আর জি কর।’ গোল দেওয়ার পরই এই জার্সি পরেন গোলদাতা। সেলিব্রেশন না- করে। ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন তিনি। মাঠেই তুলে ধরেছেন তাঁর দলের প্রতিবাদী রূপ।

Advertisement

শনিবার মেদিনীপুরে অরবিন্দ স্টেডিয়ামে এই ছবি দেখা গিয়েছে। দ্বিতীয় বিভাগীয় ফুটবল টুর্নামেন্ট চলছে এখন। মেদিনীপুর সদর মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে। লিগ কাম নকআউট ফুটবল টুর্নামেন্ট। ওই দিন একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ‘মহমেডান স্পোর্টিং ফ্যান ক্লাব, মেদিনীপুর’ ও ‘বিজয় একাদশ’। জিতেছে ‘মহমেডান স্পোর্টিং ফ্যান ক্লাব, মেদিনীপুর’। ২- ১ গোলে। জয়ী দলটির হয়ে প্রথম গোল করেন শেখ মুস্তাকিন। ১১ মিনিটের মাথায়। দ্বিতীয় গোল করেন নিশিকান্ত হাঁসদা। ৪০ মিনিটের মাথায়। পরাজিত দলটির হয়ে একমাত্র গোল করেন মেহবুব খান। ৬৩ মিনিটের মাথায়। গোলের পর সাধারণত সেলিব্রেশনে মাতেন গোলদাতা এবং তাঁর দলের সতীর্থরা। ‘মহামেডান স্পোর্টিং ফ্যান ক্লাব, মেদিনীপুর’ অবশ্য প্রথম গোলের পর সেলিব্রেশন করেনি। আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছে। একটু অন্য ভাবে।

ম্যাচের বয়স তখন ১১ মিনিট। দুর্দান্ত একটি গোল করে নিজের দলকে এগিয়ে দেন মহামেডানের শেখ মুস্তাকিন। গোলটি করার পর সেলিব্রেশন না করে তিনি পুরো দল নিয়ে ছুটে আসেন রিজার্ভ বেঞ্চের দিকে। মাঠের সাইড লাইনের ধারে তখন দাঁড়িয়ে দলের প্রধান কোচ সোমনাথ সাহা, ক্লাবটির সম্পাদক শেখ আজহারউদ্দিন প্রমুখ। একটি জার্সি আগে থেকেই প্রস্তুত করা ছিল। যে জার্সিতে লেখা ছিল, ‘জাস্টিস ফর আর জি কর।’ গোলদাতার দিকে এই জার্সি বাড়িয়ে দেন প্রধান কোচ। গোলদাতা মুস্তাকিন জার্সিটি পরে নেন। সতীর্থরা তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে পড়েন। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। এই ক্লাবের সম্পাদক শেখ আজহারউদ্দিন বলছেন, ‘‘আমরা ঠিকই করেছিলাম, এই ম্যাচে প্রথম গোলের পর কোনও সেলিব্রেশন করব না। আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ জানাব।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আসলে এই ম্যাচটা ছিল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াই। লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে প্রবেশের ম্যাচ। ম্যাচটা জিতে আমরা লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে প্রবেশ করেছি।’’

Advertisement

কলকাতায় ডুরান্ড ফাইনালেও দেখা গিয়েছে প্রতিবাদ। গ্যালারিতে দেখা গিয়েছে, ‘তোর কোনও ভয় নেই বোন, আমরা প্রতিবাদ করতে জানি’- এমন লেখা সম্বলিত ব্যানার। প্রতিবাদ দেখা গেল মেদিনীপুরের মাঠেও। মোহনবাগান সমর্থক বাসুদেব চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস- সবারই এ কথা বলা উচিত।’’ ইস্টবেঙ্গল সমর্থক অরূপ নন্দী বলছেন, ‘‘বিচারের দাবিতে সবাই স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন করছেন।’’ শহরের ফুটবলপ্রেমীরা মনে করাচ্ছেন, কলকাতায় ডার্বি বাতিল করেও প্রতিবাদের কন্ঠরোধ করা যায়নি। মহমেডানের এক সমর্থক বলছেন, ‘‘নাগরিক আন্দোলনকে রাঙিয়ে দিতে মরিয়া কেউ কেউ। সাধারণ নাগরিকদের তাগিদ কিন্তু সাদা-কালো রাখারই।’’ শহরের মাঠেও তো আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ দেখা গেল? মেদিনীপুর সদর মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক সন্দীপ সিংহ বলছেন, ‘‘আমরাও তো বলছি, বিচার চাই।’’

প্রতিবাদের সরণিতে মিলে মিশে যাচ্ছে সবুজ- মেরুন, লাল- হলুদ, সাদা- কালো। আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে ময়দানি ঐক্য মেদিনীপুরেও। সব খেলার সেরা বাঙালির তুমি ফুটবল...।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement